কলকাতা ব্যুরো: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হার নিয়ে এখনও আইনি টানাপোড়েন অব্যাহত। তারই মাঝে হারের নেপথ্য কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা মমতার অন্যতম নির্ভরযোগ্য, ঘনিষ্ঠ সহকর্মী সুব্রত বক্সির বক্তব্য এই মুহূ্র্তে ভাইরাল। তিনিও অন্তর্ঘাতের কথাই উল্লেখ করেছেন।
দিন কয়েক আগে ৭৩ নং ওয়ার্ডে প্রচার করতে গিয়ে সুব্রত বক্সি বলেন, দলের কয়েকজন সহকর্মীর অসহযোগিতার জন্য মমতা নন্দীগ্রামে জিততে পারলেন না। কিন্তু তারপর তিনি যেভাবে ভবানীপুর থেকে জিতে এসেছেন, তার জন্য আমরা গর্বিত। রাজ্যের অন্যতম হাই প্রোফাইল বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রাম। একুশের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে ঘাসফুল শিবিরের তরফে লড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গেরুয়া শিবিরের শুভেন্দু অধিকারী। সামান্য ভোটের ব্যবধানে শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামে জিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হয়েছেন।
পরে অবশ্য উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি দখলে রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নন্দীগ্রামে হারের পিছনে গোড়া থেকেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো নিজে। বিধানসভার ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে তিনি মামলা দায়ের করেছেন, সেই মামলা চলছে এখনও।
এরই মধ্যে দিন কয়েক আগে পুরভোটের প্রচারে ৭৩ নং ওয়ার্ড অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর নিজের পাড়ায় যান সুব্রত বক্সি। সেখানে দলীয় প্রার্থী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূর সমর্থনে প্রচার করতে গিয়ে নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গ টেনে আনেন। কর্মিসভায় খোলামেলাভাবেই তিনি নন্দীগ্রামের ফলাফলের নেপথ্যে দলেরই কয়েকজন কর্মীর অসহযোগিতাকে দায়ী করেন দলের রাজ্য সভাপতি। সেই অডিও ক্লিপই এখন ভাইরাল।
ভাইরাল হওয়া অডিও যে তাঁর নিজেরই, তা মেনে নিয়েছেন সুব্রত বক্সি। তাঁর বক্তব্য, এ কথা সত্যি। এই ঘটনার কথা আমি অনেক জায়গাতেই বলি। মুখ্যমন্ত্রীকে হারাতে কিছু ষড়যন্ত্র হয়েছিল। ঠিক একইভাবে দলের কিছু কর্মীর অসহযোগিতাও ছিল। তাই নন্দীগ্রামের বিধায়ক হতে পারেননি মমতা। তবে নন্দীগ্রামকে সবসময়ই আলাদা মর্যাদা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিদিনেও সেখানকার মানুষের পাশে থাকবেন। তবে দলের কারা অসহযোগিতা করেছিলেন, সে কথা আর খোলসা করেননি বক্সি।