কলকাতা ব্যুরো: প্রবল ঘূর্ণিঝড় যশ স্থলভাগের আছড়ে পড়ার সময় যত এগিয়ে আসছে, ততোই উত্তাল হচ্ছে সমুদ্র ও নদীর জল। বুধবার দুপুরের মধ্যে উড়িষ্যার উপকূলে যশের আছড়ে পড়ার পূর্বাভাস রয়েছে। তার জেরে মঙ্গলবার সকাল থেকেই সমুদ্র এবং নদীতে প্রবল জলোচ্ছাসে শুরু হয়েছে। দীঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমনি এলাকায় সমুদ্রের ঢেউ কয়েক মানুষ সমান উঁচু হয়ে আছড়ে পড়ছে উপকূলে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দিঘাতে বাড়তি ২ থেকে ৪ মিটার উচ্চতায় সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এক্ষেত্রে একদিকে যশের হানা এবং অন্যদিকে বুধবার ভরা কোটাল থাকায় সমুদ্র ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা। আর এর ফলে সমুদ্র ও নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে লোকজনকে আরও দ্রুত নিরাপদ জায়গায় সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। এখনো পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূল থেকে এদিন সকালে সমুদ্রে জল বাড়তে থাকায় তড়িঘড়ি সরিয়েছে প্রশাসন। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে এক লক্ষ ৫২ হাজার বাসিন্দাকে এখনো পর্য্ন্ত নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রামনগর ১, রামনগর ২, এগরা ১, এগরা ২, পটাশপুরে দুটি ও, নন্দীগ্রাম ১ ব্লক থেকে বেশি বাসিন্দাদের সরানো হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনায় সেই সংখ্যাটা পাঁচ লাখের উপরে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষকে তাদের নদী তীরবর্তী এলাকার বাড়ি থেকে বিভিন্ন বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পাথরপ্রতিমা, সাগর, কুলতলির বেশ কিছু এলাকায় নদীর বাঁধ ভাঙতে শুরু করায় প্রবল আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ফলে আয়লার মতো সমুদ্রের জল ঢুকে পড়ে আবার সবকিছু ভাসিয়ে দেওয়ার আশঙ্কায় গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোথাও কোথাও নিজেরাই বাঁধার চেষ্টা শুরু করেছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নদী গুলি এবং বকখালিতে সমুদ্র প্রায় দেড় থেকে দুই মিটার উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
কিন্তু যেভাবে সমুদ্র এবং নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে তাতে বুধবার যশ আছড়ে পড়ার পরে পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় যেহেতু দীঘা থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে ঘূর্ণি ঝড়টি স্থলভাগে ঢুকবে তাই এই রাজ্যে সমুদ্র উপকূলের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হতে পারে দিঘার। এই আশঙ্কা করে এদিন সেখানে সেনা পাঠানো হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার দুপুরের পর পরিস্থিতি বুঝে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করা প্রয়োজন হতে পারে। তাই একটি সেনাবাহিনীর টিম দীঘায় মোতায়েন করা হয়েছে।