কলকাতা ব্যুরো: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র আন্দোলনে আদালতের কোনও নির্দেশ অমান্য হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। সোমবার একথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। উল্লেখ্য, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা। তাঁদের এই আন্দোলনের ফলে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাও রুজু হয়েছে। হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি চলছে। ইতিমধ্যেই বিচারপতি দেবাংশু বসাক রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের আলোচনায় বসার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ সেই অনুযায়ী বৈঠকও করা হয় ৷ কিন্তু, তাতেও সমস্যা মেটেনি। আন্দোলনকারীরা এখনও তাঁদের দাবিতে অনড় ৷ এই মামলাতেই সোমবার প্রধান বিচারপতি হবু চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আন্দোলন চলাকালীন আদালতের কোনও নির্দেশ যদি কখনও অমান্য করা হয়, তাহলে আদালত কড়া পদক্ষেপ করবে।
সোমবারের শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত বলেন, ছাত্রছাত্রীদের একাংশ এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের তরফে তাঁর আইনজীবী আদালতকে জানান, আন্দোলন আগের থেকে স্তিমিত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। আন্দোলনকারীরা অধ্যক্ষকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। একাধিকবার তাঁকে ঘেরাও করা হয়েছে। ফলে তিনি স্বাভাবিকভাবে কাজ, কর্ম করতে পারছেন না।
আপাতত স্বাস্থ্য ভবন থেকে, কখনও বা নিজের বাড়ি থেকেই দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে অধ্যক্ষকে। অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য হল, ইতিমধ্যেই সকলে কাজে যোগ দিয়েছেন। ফলে এই মামলার আর কোনও প্রয়োজন নেই৷ আন্দোলনকারীদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য সরকারও ৷ অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে আদালতকে বলেন, আর জি কর রাজ্যের সব থেকে পুরনো হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজ। সেখানে আন্দোলনের নামে যে আচরণ করা হচ্ছে, যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে এই শিক্ষাকেন্দ্র এবং হাসপাতালের সম্মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে৷
স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের যে বৈঠক হয়েছিল, তার রিপোর্টও খামবন্দি করে আদালতে জমা করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। তিনি বলেন, যাঁরা ভবিষ্যতে ডাক্তার হবেন, তাঁদেরই কয়েকজন যেভাবে হাসপাতাল চত্বরে আন্দোলন করছেন, সাইলেন্ট জোনে মাইকিং করছেন, তা একেবারেই অনভিপ্রেত। এমন ঘটনা কখনই কাম্য নয়। এরপরই প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, যদি দেখা যায় ছাত্রছাত্রীরা আদালতের কোনও নির্দেশ লঙ্ঘন করছেন, তাহলে তাঁদের শাস্তি পেতে হবে। আদালত কঠোর পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে। মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।