কলকাতা ব্যুরো: স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় এবার নাম উঠছে প্রভাবশালীদের। শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সাক্ষী দিতে এসে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তৎকালীন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা একটি নথির পরিপ্রেক্ষিতে জানান, রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রী এসডি পি কে বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়োগ সংক্রান্ত একটি জটিলতা তাঁকে দেখে নেওয়ার জন্য লিখিত অনুরোধ করেছিলেন। আদালত শান্তিপ্রসাদ সিনহার সেই বক্তব্য নথিবদ্ধ করেছে। আদালতের আরও একটি প্রশ্নের জবাবে প্রাক্তন উপদেষ্টা জানান, এমন অন্তত শ’দুয়েক সমস্যা নিয়ে আসা মানুষের অভাব-অভিযোগ দেখার জন্য তিন সদস্যের পরীক্ষা নিয়ামক কমিটির কাছে তাকে পাঠানো হয়েছিল।
আদালতে চাঞ্চল্যকর সব অভিযোগ করলেও এদিন প্রাক্তন এসএসসি উপদেষ্টা একই প্রশ্নের নানা রকম উত্তর দেওয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁকে ভর্ৎসনা করে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে হাজতবাস করোনোরও হুঁশিয়ারি দেয়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এমন সব নথি এবং সাক্ষ্য সামনে আসছে, তাতে সিবিআই তদন্ত ছাড়া গতি নেই বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি। ২৫ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
২০১৬ স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্টের মাধ্যমে 6জনকে বেআইনিভাবে নিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে যে মামলা দায়ের হয়েছিল, তার কিনারা করতেই নজিরবিহীন ভাবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একের পর এক স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন আধিকারিককে ডেকে পাঠাচ্ছেন আদালতে। আদালতের মধ্যেই কখনও রুদ্ধদ্বার আবার কখনও স্বাভাবিক সওয়াল-জবাব চলছে।
শুক্রবার মামলাকারীর তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্রাচার্য ও ফিরদৌস শামিম স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ পান। বিকাশরঞ্জন ভট্রাচার্য ওই আধিকারিককে জিজ্ঞাসা করেন, রাজ্য সরকারের কোনও মন্ত্রী বা অন্য কারও বলার ভিত্তিতেই তিনি কি এই ছ’জনকে সুপারিশ করেছিলেন? পরোক্ষে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম জড়ালেও সরাসরি আইনজীবীর অভিযোগ শান্তিপ্রসাদবাবু অস্বীকার করেন।