কলকাতা ব্যুরো: বালি পুরসভায় পৃথক ভোট করার জট কাটলো। বিলে সই করলেন রাজ্যপাল। বৃহস্পতিবার মামলা শেষ হওয়ার পর সেই নথি রাজ্যের অ্যাডভোকেট  জেনারেলের হাতে আসে। শুক্রবার বেলা ২ টো নাগাদ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিষয়টি জানালেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ফলে হাওড়া ২২ জানুয়ারি ও ২৭ ফেব্রুয়ারি বালিতে আলাদা ভোট করায় বাধা থাকলো না।

শাসকদল ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫-এর জুলাইতে হাওড়া পুরনিগমের সঙ্গে বালি পুরসভার সংযুক্তিকরণ হয়। এর ফলে বালির ৩৫টি ওয়ার্ড কমে দাঁড়ায় ১৬-তে। স্বভাবত, এই পদক্ষেপে বালি এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছিল। যার প্রভাব পড়েছিল ভোটের ফলাফলে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বালির ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি তে পিছিয়ে ছিল শাসকদল। এরপর আর অপেক্ষা না করে সংশোধনের রাস্তায় হাঁটে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ কয়েক মাসের মধ্যেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে হাওড়া ও বালি পৃথকীকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

চলতি বিধানসভার অধিবেশনে হাওড়া পুরনিগম সংশোধনী বিল, ২০২১ পাশ করে রাজ্য সরকার ৷ এই বিলে বালিকে ফের হাওড়া পুরনিগম থেকে আলাদা করার কথা উল্লেখ করা হয় ৷ এবার বিলটি অনুমোদনের জন্য যায় রাজ্যপালের কাছে ৷ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই বিল সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানতে চান ৷ কিন্তু বারংবার চাওয়ার পরেও রাজ্যপালকে তথ্য না দেওয়ায় বিলটি নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি ৷

এ প্রসঙ্গে বহুবার সংবাদমাধ্যমের সামনে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল ৷ এদিকে ওই বিল সংক্রান্ত সব তথ্য রাজ্যপালকে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে রাজ্য সরকার ৷ রাজ্য বনাম রাজ্যপাল যুদ্ধের মাঝে সমস্যায় পড়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷ রাজ্যপাল সই না করায় কলকাতা পুরনিগমের সঙ্গে হাওড়ার ভোট করতে অপারগ কমিশন শুধু কলকাতার পুর নির্বাচন সম্পন্ন করে ৷

এরপর কলকাতা হাইকোর্টে বাকি পুর নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে হলফনামা জমা করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই হলফনামায় কমিশন দাবি করেছে, রাজ্যপাল হাওড়া সংশোধনী বিল ২০২১-এ স্বাক্ষর করেছেন ৷ তাই এবার সেখানে নির্বাচন করা সম্ভব ৷ সেই মর্মে আগামী ২২ জানুয়ারি হাওড়া পুরনির্বাচন করার কথা ভাবছে কমিশন ৷ যদিও ওই হলফনামার প্রেক্ষিতে রাজভবন থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷

প্রসঙ্গত দীর্ঘ তিন বছর ধরে পুরনিগমের নির্বাচন বাকি পড়ে রয়েছে ৷ পুর প্রতিনিধি না থাকায় পুরনিগম এলাকায় পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে ৷ রাজ্য সরকারের তরফে পুরনিগমের প্রশাসকমণ্ডলী বসিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে ৷ তবুও পুরনিগমের স্বাভাবিক পরিষেবার সমস্যা কাটেনি বলেই মনে করেন হাওড়া শহরবাসী । এবার নির্বাচন হলে সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে ৷

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version