কলকাতা ব্যুরো: নবম-দশম শ্রেণির সহকারী শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ফের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। আদালতের নির্দেশ, আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নতুন করে এফআইআর দায়ের করবে সিবিআই। শুক্রবারের মধ্যেই প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করতে হবে তাদের। এই মামলাকে আগের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া গ্রুপ ডি লক্ষ্মী তুন্দর মামলার সঙ্গে যুক্ত করা হলো কারণ মামলার হলফনামায় দেখা যাচ্ছে নিয়োগ কমিটি অন্তত দুই থেকে বেশি মিটিং করেছিল। যদিও উপদেষ্টা (তিনি কমিটির কনভেনরও) বলেছিলেন, কোনো মিটিং হয় নি।

প্রয়োজনে এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা এবং বাকি সদস্যদের আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই। এমনটাই নির্দেশ আদালতের। বৃহস্পতিবার আদালত জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে যে কাউকে, এমনকী কোনও রাজনৈতিক নেতাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআই। প্রয়োজনে কমিটির অন্যান্য সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে তারা। একইসঙ্গে এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ সিবিআইয়ের সামনে উপদেষ্টা কমিটির বাকি সদস্যরা যা বয়ান দিয়েছেন তার সঙ্গে শান্তিপ্রসাদ সিনহার বয়ান মিলছে না।

এদিন বিচারপতি আরও জানান, আদালতের সামনে শান্তিপ্রসাদ সিনহা বারবার বলেছেন যে উপদেষ্টা কমিটির কোনও বৈঠক হয়নি। তিনি নির্লজ্জের মতো মিথ্যা বলেছেন। কিন্তু এই মামলায় দেখা যাচ্ছে যে ওই কমিটির কমপক্ষে দু’টি বৈঠক হয়েছিল বা তার বেশিও হয়ে থাকতে পারে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, তাহলে কেন বারবার মিথ্যা বলছেন শান্তিপ্রসাদ সিনহা?

আদালত আরও জানায়, মন্ত্রীর চেম্বারে উপদেষ্টা কমিটির কোনও বৈঠক হয়েছিল কিনা, বৈঠক সম্পর্কে মন্ত্রী কিছু জানতেন কিনা, সেটা তদন্তসাপেক্ষ। সিবিআই চাইলে সেটা খতিয়ে দেখতে পারে। এদিকে আদালতে সরকারি আইনজীবীরা আবেদন জানান, রাজ্যকে তদন্ত করার সুযোগ দেওয়া হোক। যদি কোনও বৈঠক হয়ে থাকে তাহলে সেটা মন্ত্রীর আপ্তসহায়কের চেম্বারে হয়ে থাকতে পারে। মন্ত্রী এ বিষয়ে কিছু জানতেন না। কমিশনের তরফেও তদন্ত করার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

বিচারপতির প্রশ্ন, পেটে খিদে থাকলে আর পকেটে টাকা না থাকলে কেমন লাগে জানেন? সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবকে চিঠি দিয়েছিল বার কাউন্সিল। এ প্রসঙ্গে বিচারপতির মন্তব্য, বার কাউন্সিল প্রধান বিচারপতিকে যে চিঠি দিয়েছে সেটা খুব ভাল করে লেখা হয়েছে। কে লিখেছে আমি আন্দাজ করতে পারি। ওই লেখনী থেকে আমাদের শেখা উচিত। আমাকে বিচারপতি কারনানের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আমাকে হজম করতে হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version