কলকাতা ব্যুরো: লজ্জাজনক, অপব্যবহার, বিশ্বাসঘাতকতা, নাটক, দুর্নীতিগ্রস্ত, অযোগ্য, ভণ্ডামি, নৈরাজ্যবাদী, শকুনি, স্বৈরাচারী ইত্যাদি অসংখ্য শব্দকে অসংসদীয় (Unparliamentary Words) বলে ঘোষণা করেছে লোকসভার সচিবালয়। আগামী ১৮ জুলাই শুরু হবে সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন। তার আগে সংসদ সদস্যদের হাতে অসংসদীয় শব্দের (Unparliamentary Words) তালিকা ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সূত্রের খবর, রাজ্য বিধানসভাগুলি সাধারণত লোকসভা সচিবালয় প্রকাশিত অসংসদীয় শব্দের (Unparliamentary Words) তালিকা অনুসরণ করে থাকে। তবে বাংলার বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা সচিবালয়ের বুধবারের প্রকাশিত শব্দ তালিকা (Unparliamentary Words) দেখে বিস্মিত। তিনি বলেন, আমি মনে করি, বিরোধীধের কণ্ঠরোধ করতেই এই শব্দগুলিকে অসংসদীয় শব্দের (Unparliamentary Words) তালিকায় ফেলা হয়েছে। আসলে কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে বিরোধীদের বক্তব্যে যেন ধার না থাকে।

বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, সংসদ, বিধানসভা হলো বিরোধীদের সরকারকে চেপে ধরার জায়গা। বিরোধীদের অধিকার রয়েছে সরকারের সমালোচনা, দোষ-ত্রুটি চিহ্নিত করার। সেই অধিকার খর্ব করতেই এমন অনেক শব্দ অসংসদীয় বলে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে যেগুলি যে কোনও মানুষ হামেশাই ব্যবহার করে।

তবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা কি তাহলে এই শব্দ তালিকা অনুসরণ করবে না? এমন প্রশ্নের উত্তরে স্পিকার বলেন, অনেক শব্দ এই তালিকায় আছে যা অসংসদীয় বলে জনপ্রতিনিধিদের মুখ থেকে কেড়ে নেওয়া যায় না কারণ, শব্দ সংসদীয় কী অসংসদীয় তা শুধুমাত্র তার আভিধানিক অর্থের উপর নির্ভর করে না। শব্দটি ব্যবহারের উদ্দেশ্য, প্রেক্ষাপট এই সব বিষয়ও খতিয়ে দেখতে হয়। এরপরই তিনি বলেন, আমাদের রাজ্য কি হবে সেটা পরে আমরা ঠিক করবো। তবে আমার ব্যক্তিগত মত হলো এর কোনো দরকার নেই। কোন শব্দ বাদ যাবে আর কোনটা রাখা হবে সবটাই স্পিকার ঠিক করেন।

বিমানের কথায়, অনেক সাধারণ, নিরীহ, সংসদীয় শব্দকেও কাউকে আঘাত করা, খাটো করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ব্যবহারের উদ্দেশ্য বিবেচনায় রেখে স্পিকারের অধিকার আছে তা বাতিল করার। কিন্তু একগুচ্ছ শব্দকে অসংসদীয় ঘোষণা করে আসলে বিরোধীদের মুখের ভাষা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version