এক নজরে

#KKDemise: কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসে প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী কে কে, শোকপ্রকাশ মোদী-শাহর

By admin

June 01, 2022

কলকাতা ব্যুরো: প্রয়াত গায়ক কে কে। নজরুল মঞ্চে উল্টোডাঙার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের গানের অনুষ্ঠান চলাকালীন অসুস্থ হয়ে মৃত্যু সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথের। বাংলা, হিন্দি, তামিল, কণ্ণড়, মালয়ালাম, মারাঠি, অসমীয়া ভাষায় গান গেয়েছেন। এদিন অনুষ্ঠান করে হোটেলে ফিরে যাওয়ার পরই খানিক অসুস্থ হয়ে পড়েন গায়ক। রপর অনেকেই তাঁর সঙ্গে ছবি তুলতে চাইছিলেন। কিন্তু ছবি তুলতে চাননি সংগীত শিল্পী। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েন সংগীত শিল্পী কেকে তথা কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। তারপরই CMRI হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রখ্যাত শিল্পীর। সঙ্গীতশিল্পীর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে খবর। তবে জানা গিয়েছে, এদিন নজরুল মঞ্চের ভিতরে ফায়ার এক্সটিঙ্গুইসার খুলে দেওয়া এবং বেশি লোক ঢুকে পড়ায় একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। সেই নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

তিনি জানান, অফিস থেকে ফেরার পথে অনুপম রায় ফোন করে তাঁকে জানান কেকের বিষয়টি। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান মন্ত্রী। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বুধবারই সঙ্গীতশিল্পীর দুই ছেলে ও স্ত্রী সকালে কলকাতায় উড়ে আসবেন। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে প্রয়াত গায়কের মরদেহ। অরূপ বিশ্বাস এও জানান যে, কেকে-র ম্যানেজারের সঙ্গে কথা হয়েছে।

তবে এদিন প্রোগ্রাম চলাকালীন বারবার ব্যাক স্টেজে গিয়ে ঘাম মুচ্ছিলেন, জল খাচ্ছিলেন কেকে। দৃশ্যতই বোঝা যাচ্ছিলো, শারিরীক একটা অস্বস্তি আছে। তারপরই স্টেজের সামনের হাইভোল্টেজের আলোগুলো উদ্যোক্তাদের নিভিয়ে দিতে বলেন সঙ্গীতশিল্পী। তারপর একটা গান গেয়েই প্রোগ্রাম শেষ করেন। এরপরই হোটেলে ফিরে সংজ্ঞা হারান।

পাশাপাশি এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, মোটামুটি ৮:৩৫ নাগাদ উনি স্টেজ ছাড়েন, ব্যাক স্টেজে কিছু ক্ষন সময় কাটানোর পর পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন, সেলফি তোলেন তারপর সেখান থেকে বের হয়ে যান হোটেলের উদ্দেশে।

সোমবারও কলকাতায় একটি অনুষ্ঠান করেন তিনি। পরপর ২ দিন শো ছিল। কলকাতায় শো করতে এসে বেজায় উচ্ছ্বসিত ছিলেন তিনি বলেও জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নজরুল মঞ্চে শো চলাকালীনই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন কেকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।

কলকাতাতেই নিজের জীবনের শেষ শো করে গেলেন কেকে। সন্ধে ৬.৪৫ টায় নজরুল মঞ্চে প্রবেশ করেন। সাড়ে ৮টা নাগাদ হোটেলে ফিরে যান। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপরই হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয় তাঁকে। নয়াদিল্লিতে বেড়ে ওঠা এবং পড়াশোনা। জানা যায়, বলিউডে কাজের সুযোগ পাওয়ার আগে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার জিঙ্গলস গেয়েছেন তিনি। ১৯৯৭ সালে ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক। হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলেগু, কন্নড়, মালায়লম, মারাঠি, ভাষায় প্লেব্যাক করেছেন। ২০০৫-এ তামিল ভাষায় বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে কন্নড় ভাষায় সাউথের ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পান।

এদিকে সঙ্গীতশিল্পীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, শ্রেয়া ঘোষাল থেকে শুরু করে অজয় দেবগণ থেকে শুরু করে একাধিক ব্যক্তিত্ব।

বাংলা, হিন্দি, তামিল, কান্নাড়, মারাঠি একাধিক ভারতীয় ভাষায় গান গেয়েছেন কেকে। তাঁর প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন ২৭ বছরের বন্ধু মিউজিক কম্পোজার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শোকের ছায়া বাংলা সঙ্গীতজগতেও। ইমন চক্রবর্তী, অনুপম রায়-সহ অনেকেই শোকপ্রকাশ করেছেন। জিতের কাছ থেকে ফোনে দুঃসংবাদ শুনে বিশ্বাস-ই করতে পারছেন না সোনু নিগম।

কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল? আগে থেকেই কোনও অসুস্থতা ছিল কেকের? সদ্য প্রয়াতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু জিৎ জানালেন,  কিছু ছিল না। একদম সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। নিয়মিত ব্যায়াম করত, মেপে খেত। ভীষণ ডিসিপ্লিনড জীবন যাপন করত।