এক নজরে

নিউটাউনের আবাসনে শ্যুট আউট

By admin

June 09, 2021

কলকাতা ব্যুরো: কলকাতার অভিজাত এলাকা হিসেবে গড়ে ওঠা নিউটাউনের এক বড় আবাসন শাপুর্জি আবাসন। সেখানেই বুধবার বিকেলে আবাসনের মধ্যে ঘটে গেল রোমহর্ষক ঘটনা। আশপাশের লোক কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাদা পোশাকে কয়েকজন উঠে পড়েন আবাসনের তিনতলায়। আরো একটি দল নিচে থেকে সেই বিল্ডিং কার্যত ঘিরে ফেলে। উপরে উঠে দলটি একটি দরজায় টোকা মারে। কিন্তু দরজা খোলার আগেই সেখান থেকে গুলি ছুটে আসে। দরজার কী হোল দিয়ে ছুটে আসা গুলিতে জখম হন কার্তিক মোহন ঘোষ নামে এক পুলিশ অফিসার। হতচকিত অবস্থা কাটিয়ে বাইরে থেকে পুলিশ কী হোল দিয়ে পাল্টা গুলি চালায়। দুপক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি বিনিময়ের পর, ভেতর থেকে আর কোন সারা শব্দ মেলেনি।একসময় সাদা পোশাকে থাকা রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স পুলিশকর্মীরা বুঝতে পারেন ভিতরে যারাই থাকুক তারা আর লড়াইয়ের মত অবস্থায় নেই। সব দিক দেখে নিযে এরপর দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পুলিশ।

জীবিত গ্রেপ্তার করতে না পারলেও পাঞ্জাবের কুখ্যাত দুই দুস্কৃতির মৃতদেহ পুলিশ উদ্ধার করে ওই ফ্ল্যাট থেকে। ১৫ মে পাঞ্জাবের লুধিয়ানা বাজারের উপরে দুই পুলিশ কর্মীকে খুন করেছিল চারজন। তাদের মধ্যে দুজনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারলেও, বাকি দুজন অধরা ছিল। এক মে পাঞ্জাব পুলিশ জানতে পারে কুখ্যাত গ্যাংস্টার জশপাল ভূল্লার ও যশ প্রীত সিং কলকাতার কাছে কোথাও ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। তখন তারা পাঞ্জাব থেকে যোগাযোগ করে এ রাজ্যে পুলিশের সঙ্গে। স্পেশাল টাস্কফোর্স কেসের দায়িত্ব নেয়। দুষ্কৃতীদের মোবাইলের সূত্র ধরে কয়েকদিন ধরে হদিশ চলতে থাকে তাদের ঠিকানার। একইসঙ্গে চলতে থাকে সোর্স মারফত খোঁজ নেওয়া। ধীরে ধীরে চিহ্নিত করা হয় নিউটাউনের অভিজাত শাপূর্জি আবাসনের একটি ফ্ল্যাটকে।মৃত দুজন পাঞ্জাবের কুখ্যাত অপরাধী দলের সদস্য বলে জানতে পেরেছে রাজ্য পুলিশ। দুজনের মাথার দাম দেওয়া হয়েছিল ১০ লক্ষ টাকা করে। এদের বিরুদ্ধে অন্তত ৪০ টি খুন, অপহরণ, তোলাবাজি, রাহাজানি, ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে পাঞ্জাবে। ভুল্লার আবার সেখানকার এক পুলিশ কর্মীর ছেলে।

কলকাতার আশপাশে গত কয়েক বছরে তৈরি হওয়া এইসব আবাসন গুলি কতটা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য নিরাপদ, এদিনের ঘটনা সেই প্রশ্ন তুলে দিল। ২৩ মে থেকে এই দুই দুষ্কৃতী ফ্ল্যাটটিতে এসে ঘাঁটি গেড়ে ছিল। কিন্তু কার থেকে এই ফ্ল্যাট তারা পেয়েছিল, সেই যোগ ইতিমধ্যেই খুঁজতে শুরু করেছে পুলিশ। আর এই ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ জানাচ্ছেন।