কলকাতা ব্যুরো: লকডাউনের মধ্যে বেসরকারি স্কুলগুলির বেতন ছাড় নিয়ে দায়ের হওয়া মামলায় মঙ্গলবার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট। এই রায় একদিকে অভিভাবকদের আশু সমস্যা সমাধানের রাস্তা দিয়েছে হাইকোর্ট। মূলত স্কুল বন্ধ থাকা কালিন বেতনের ২০ শতাংশ ছাড় দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি যে সমস্ত ক্ষেত্রে স্কুল বন্ধ থাকায় কোন সার্ভিস (অর্থাৎ কম্পিউটার ক্লাস, বাসের খরচ, সাইন্স ল্যাবরেটরি চার্জ) না দেওয়া হলে এমন কোন চার্জ আগামী যতদিন স্কুল বন্ধ থাকবে ততদিন নিতে পারবেনা স্কুল গুলি।
আবার অন্যদিকে স্কুলগুলির ক্ষেত্রে যেমন হাইকোর্ট বলেছে এ বছর ৫ শতাংশের বেশি লাভ করতে পারবে না স্কুল। আবার এবছর যে ক্ষতি হয়েছে তা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য বিরাট সুযোগ স্কুলগুলোকে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। হাইকোর্ট রায় বলেছে, এ বছর যদি কোনো আর্থিক ক্ষতি হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে ২০২১ -২০২২ ও ২০২২ – ২০২৩ অর্থবর্ষে তা তুলে নেওয়ার সুযোগ পাবে স্কুলগুলি। অভিভাবকরা মনে করছেন, এই একটি জায়গায় স্কুলগুলিকে সুদে-আসলে সব মিটিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে হাইকোর্ট। কেননা এ বছর যেটুকু ছাড় দিতে হবে তার বাইরে পরের দুটি আর্থিক বছরে এই গুলি তুলে নেওয়ার জন্য স্কুল গুলি যেমন খুশি বেতন এবং অন্যান্য চার্জ ধার্য পারবে। এবং সেক্ষেত্রে তাদের হাতে থাকল হাইকোর্টের এই রায়। যদিও রায় দেখে প্রাথমিক প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বেশ কয়েকটি স্কুল জানিয়েছে, এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার তারা ভাবনা চিন্তা করছে। যদিও অভিভাবকরা এদিনের রায় মোটের উপর খুশি। ইউনাইটেড গার্জিয়ান এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ছয় মাস ধরে করোনা পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা আবেদন করছেন হাইকোর্টের আজকের রায় তাকেই মান্যতা দিলো। এই সফলতা অভিভাবকদের আন্দোলনেরই ফল। তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন, অবিলম্বে বেসরকারি স্কুলগুলিকে নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও রেগুলেটরি বোর্ড গঠন ও আইন প্রণয়ন করা হোক।
এক নজরে রায় —
১) বর্তমান অর্থবর্ষে কোনো ফী বৃদ্ধি করা যাবে না।
২) এবছরের এপ্রিল মাসে থেকে স্কুল না খোলা পর্যন্ত সব বোর্ডের ১৪৫ টি বেসরকারি স্কুল ন্যূনতম ২০ শতাংশ ফী মকুব করবে।
৩) যে পরিষেবা নেওয়া হয়নি তার জন্য টাকা নেওয়া যাবে না।
৪) বর্তমান অর্থবর্ষে কোনো শিক্ষক বা অশিক্ষক কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধি করা যাবে না। কোন স্কুল তা করলেও সেটা ফী থেকে নেওয়া যাবে না।
৫) আর্থিক ভাবে সচ্ছল হলে ফী তে ছাড় না নেওয়ার পরামর্শ।
৬) অতিরিক্ত ছাড় বা কিস্তিতে ফী জমা করার জন্য অভিভাবকরা ১৫ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন জানাতে পারবেন এবং স্কুল তাদের সিদ্ধান্ত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জানাবে।
৭) যারা ইতিমধ্যেই ফী দিয়েছেন তা ফেরত দেওয়া হবে না তবে অতিরিক্ত টাকা এই অর্থবর্ষের বাকি মাসের সঙ্গে ভাগ করে দেওয়া হবে।
৮) এই অর্থবর্ষে খুব জরুরি না হলে পরিকাঠামোগত নির্মাণের কাজ করা যাবে না।
৯) এই ১৪৫ টি স্কুলের মধ্যে যাদের ফী মাসিক ৮০০ টাকার থেকে কম তাদের ক্ষেত্রে আজকের নির্দেশ গুলি কার্যকর হবে না।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version