কলকাতা ব্যুরো: হাঁসখালি ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে রাজ্যজুড়ে চলছে জোর আলোচনা। বিরোধীদের দাবি, শাসকদল তৃণমূল এই ঘটনার বিষয়ে উদাসীন। তবে ঘাসফুল শিবির যে নারী নির্যাতনের ঘটনা রুখতে মোটেও উদাসীন নয়, তারই যেন প্রমাণ দিলেন বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায়। তাঁর দাবি, ধর্ষণ রুখতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিতে হবে। সৌগত রায়ের মন্তব্যকে সমর্থন করেছেন বিরোধীরাও।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণেশ্বর থানার উদ্বোধন করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, সকলেই চিন্তিত মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে। এখানে একেবারে জিরো টলারেন্স করতে হবে। কোনরকম কোনও ঘটনা ঘটলে কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে হবে। যে রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, সে রাজ্যে একটা ঘটনা ঘটলেও তা লজ্জার। আমি আশা করি পুলিশ প্রশাসন সেদিকে নজর রাখবে।
সৌগত রায়ের মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন বিরোধীরা। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তৃণমূল সাংসদকে সমর্থন করে বলেন, আপনি যা বলছেন, তা সম্পূর্ণ ঠিক। কালীঘাটে গিয়ে আগে এই কথাটি বোঝান। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি প্রায় একইরকম। তাঁর কথায়, তৃণমূল সাংসদ একেবারে ঠিক কথাই বলেছেন বরং মুখ্যমন্ত্রী হাঁসখালি কাণ্ড নিয়ে যা বলেছেন তা হাস্যকর।
কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও সৌগত রায় সমর্থন করেছেন। তৃণমূল সাংসদের মন্তব্যকে মানবিক বলেই দাবি তাঁর।
যদিও নব্য তৃণমূল নেতা জয় প্রকাশ মজুমদার দলের বর্ষীয়ান সংসদের এই বক্তব্যে পাল্টা যুক্তি খুঁজেছেন। তাঁর বক্তব্য, যে কোনো মানুষই নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বলবেন। এটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু সৌগত বাবুর এ রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী প্রসঙ্গে জয় প্রকাশের পাল্টা প্রশ্ন, তাহলে যে রাজ্যে পুরুষ মুখ্যমন্ত্রী, সেখানে নারী নিগ্রহ হলে কি সেটার অন্য ব্যাখ্যা হবে?
উল্লেখ্য, এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হাঁসখালি ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে মুখ খোলেন। হাঁসখালির কিশোরী ধর্ষিতা হয়েছে নাকি অন্তঃসত্ত্বা, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। কেন মৃত্যুর প্রায় পাঁচদিনের মাথায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হল, সে প্রশ্নও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। দেহটা পুড়িয়ে দেওয়া নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন। বাংলায় কোনও রাজনৈতিক রং না দেখেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেই জানান প্রশাসনিক প্রধান।
মুখ্যমন্ত্রীর পর বুধবার তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ও মুখ খোলেন। ৯৩ শতাংশ ধর্ষণই পরিবারের অভ্যন্তরে ঘটে বলেই দাবি করেন তিনি। তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব হন বিরোধী বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস।