কলকাতা ব্যুরো: ৪০ জন পড়ুয়া-সহ উধাও তিনটি স্কুল বাস। ছুটির পর প্রায় তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি কোনও পড়ুয়াই। দীর্ঘক্ষণ যোগাযোগ করা যায়নি বাস চালকের সঙ্গেও। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় সল্টলেক শিক্ষা নিকেতনে। খবর পেয়ে দুশ্চিন্তায় স্কুলে পৌঁছন অভিভাবকরা। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, বাসে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এই দেরি। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটলো? বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে শুক্রবার বিকেলে স্কুলে পৌঁছন সিআইডির গোয়েন্দারা।
অভিভাবকরা জানিয়েছে, করোনা পরবর্তীকালে শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে অফলাইন ক্লাস। স্বাভাবিকভাবেই পড়ুয়ারা এদিন স্কুলে গিয়েছিল। ছুটি হয়েছে সওয়া এগারোটায়। পড়ুয়াদের নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় তিনটি বাস। ফলে বারোটা থেকে সাড়ে ১২ টার মধ্যে সকলের বাড়ি পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু কেউ বাড়ি যায়নি। ঘড়ির কাঁটা একটা পেরতেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যান অভিভাবকরা। একে একে জানা যায়, কোনও পড়ুয়াই বাড়ি ফেরেনি।
এরপরই সল্টলেক শিক্ষা নিকেতনে হাজির হন অভিভাবকরা। সল্টলেকের মহিষবাথান এলাকারই স্কুলটি মূলত মর্নিং স্কুল। এদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে স্কুল চত্বরে। চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও হদিশ পাওয়া যায়নি পড়ুয়াদের। বাসের চালকের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ বারবার দাবি করে, বাস খারাপ হয়ে যাওয়ায় বিপত্তি ঘটেছে। মোবাইলের শেষ লোকেশান ট্র্যাক করে বাসের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ।

এরই মাঝে হদিশ মেলে দুটি বাসের। জানা গিয়েছে, রুট ভুলে অন্য পথে চলে গিয়েছিলেন চালকেরা। ফলে এই বিপত্তি। পরবর্তীতে হদিশ মেলে আরেকটি বাসেরও। জানা গিয়েছে, স্কুলে ছোটদের ক্লাস দীর্ঘদিন পরে শুরু হয়েছে। ফলে কোন পড়ুয়া কোন বাসে ফিরবে তা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। আর সেই কারনেই অনেক পড়ুয়া যে রুটের বাসে ওঠার কথা সেই বাসে না উঠে অন্য রুটের বাসে উঠে পড়ে। সেই কারনেই দেরি হয়েছে বলেই সাফাই দিয়েছে স্কুল। অবশেষে প্রায় দুপুর ৩টে নাগাদ বাড়ি ফিরেছে পড়ুয়ারা। ফলে স্বস্তিতে অভিভাবকরা।
উল্লেখ্য, স্কুলের ৩টি বাস সকাল ১১টা ৩৫ নাগাদ স্কুল থেকে বেরোয়। একটি বাস যাচ্ছিল নিউটাউন, একটি বাস যাচ্ছিল এয়ারপোর্ট এবং অপর বাসটি কলকাতার দিকে যাচ্ছিল। ছোট ছোট পড়ুয়াদের অনেকেই নির্দিষ্ট রুটের বাস ভুলে যেতেই পারেন কিন্তু সমস্ত পড়ুয়াদের সঠিক বাসে তুলে বাড়ি পাঠানোর দায়িত্ব কখনোই স্কুল কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করতে পারে না। এই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে।