কলকাতা ব্যুরো: সব্যসাচী দত্ত, জয়প্রকাশ মজুমদার এবং দেবাশিস জানা। প্রথম জন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে বিধাননগর পুরভোটে প্রার্থী হয়েছেন। দ্বিতীয় জনকে বিজেপি সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তৃতীয় জন বিধাননগর পুরভোটের বিজেপি প্রার্থী। সেই বিজেপি প্রার্থীর সামনে তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্তকে হাসিমুখে জড়িয়ে ধরলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। শনিবার বারবেলায় পুরভোটের দিন এমনই ছবি ধরা পড়ল মিডিয়ার ক্যামেরায়। বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস জানার সঙ্গেও সৌজন্য বিনিময় করেন জয়প্রকাশ। কিন্তু প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন, সব্যসাচীর বেলায় জয়প্রকাশের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে যে আন্তরিকতা ছিল তা দেবাশিস জানার ক্ষেত্রে ‘মিসিং’ ছিল। এমনকি বিজেপি প্রার্থীর তোলা ছাপ্পা ভোটের অভিযোগকে তেমন আমল দিতে চাননি জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘আমি শান্তিতেই ভোট দিয়েছি।’
দুই ভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতার মধ্যে সৌজন্য বিনিময়ের মধ্যে নতুনত্ব কিছু নয় কিন্তু দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এক নেতা অন্য দলের নেতাকে জড়িয়ে ধরছেন, তাতে কিছু তো কানাঘুষো হবেই। এমনিতেই সাসপেন্ড হওয়ার পর তৃণমূলের সর্বময়নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুণগান মাঝেমধ্যে শোনা যায় জয়প্রকাশের গলায়। সেই তিনি ভোটের দিন সব্যসাচী দত্তকে জড়িয়ে ধরে বিজেপির সঙ্গে দুরত্ব আরও বাড়ালেন কিনা সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এদিন বিধাননগরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ভগবতী দেবী বালিকা বিদ্যালয়ে ভোট দিতে যান জয়প্রকাশ। তাঁর পৌঁছনোর আগেই অনুগামীদের নিয়ে সেখানে চলে গিয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। একটি বাড়ির সামনে গিয়েও দাঁড়ান। সেই বাড়ির গেটের কাছে বসে ফোনে কথা বলছিলেন বিজেপি প্রার্থী। তাঁকে দেখেও যেন না দেখার মতো ভান করে সামনেই দাঁড়িয়ে থাকেন সব্যসাচী দত্ত। দু’জনের মধ্যে কোনও কথাবার্তা হয়নি।
এর কিছুক্ষণ পরই জয়প্রকাশ মজুমদার সেখানে পৌঁছন। ভোট দিয়ে স্কুল থেকে বেরিয়ে আসার পরই সব্যসাচী দত্তের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। জয়প্রকাশকে দেখে এগিয়ে যান তৃণমূল প্রার্থী। তাঁকে কাছে টেনে নেন সব্যসাচী দত্ত। প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন, জয়প্রকাশের বেলায় সব্যসাচী রাজনৈতিক সৌজন্য দেখালেও দেবাশিস জানাকে তিনি পাত্তাই দেননি।
শনিবার সকাল থেকে বিধাননগর-সহ রাজ্যের চার পুরনিগমের ভোট চলছে। সব জায়গা থেকেই বিক্ষিপ্ত হিংসার খবর পাওয়া যাচ্ছে। শাসকদলের বিরুদ্ধে ভোট লুঠ, রিগিং ও সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বিধাননগর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস জানাও অভিযোগ করেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে ছাপ্পা মারা হচ্ছে। যার জবাবে জয়প্রকাশ বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। দেবাশিসবাবু নিশ্চয়ই সেরকম প্রমাণ পেয়েছেন। নির্বাচন কমিশনকে সেই প্রমাণ তিনি দেবেন।
তাল কাটলো একটু পরেই। এরপরই বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন জয়প্রকাশ। বলেন, আমি এই ওয়ার্ডেই থাকি৷ আমি দেবাশিসবাবুকে অন্তত কোথাও প্রচারে দেখিনি।