কলকাতা ব্যুরো: ছাগলের টোপেই অবশেষে কাত দক্ষিণরায়। অবশেষ খাঁচাবন্দি গোসাবার মথুরাখণ্ড এলাকার ত্রাস রয়্যাল বেঙ্গল। বুধবার ভোররাতে বনদপ্তরের পাতা খাঁচায় ধরে দেয় সে। এদিন বাঘটিকে খাঁচাবন্দি করে সজনেখালিতে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক পরীক্ষার পর বুধবারই জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। দক্ষিণরায় খাঁচাবন্দী হওয়ায় হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন এলাকাবাসী এবং ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্মীরা।

সোমবার রাতে ম্যানগ্রোভ জঙ্গল ছেড়ে গোসাবার মথুরাখণ্ড লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল পূর্ণবয়স্ক বাঘটি। বেশ কয়েকটি গবাদি পশুও তার হামলায় খতম হয়। এরপর এলাকাবাসীর চিৎকার-চেঁচামেচিতে বাঘটি লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। সেই আতঙ্কে ঘুম উড়েছিল এলাকাবাসীর। খবর পেয়ে আসে বনদপ্তরের কর্মীরা।

সন্ধে হতেই গোটা গ্রাম হ্যালোজেনের আলোয় মুড়ে ফেলা হয়। পাতা হয় জালও। দু’প্রান্তে দুটি খাঁচাও পাতা হয়েছিল। দেওয়া হয় ছাগলের টোপও। সেই টোপ গেলে বাঘ। ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ ছাগলের লোভে খাঁচায় ঢোকে বাঘটি। সে আপাতত সুস্থই আছে বলে খবর। এদিন সজনেখালিতে নিয়ে গিয়ে তার একপ্রস্থ চিকিৎসা করা হয়। তারপরই তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিদ্যার জঙ্গল থেকে একটি পূর্ণবয়স্ক রয়েল বেঙ্গল টাইগার ঢুকে পড়েছিল ওই বালি আমলা মেথির মথুরাখণ্ড এলাকায়। জানা গিয়েছে, সেখানে ঢোকার পর তিনটি ছাগল এবং একটি গরু মারে বাঘটি। স্থানীয় বাসিন্দা হাবুল দাস নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে হানা দেয় সে। গোয়ালঘরে ঢুকে গরু এবং ছাগলগুলি মারে। তারপর লোকালয় সংলগ্ন এক জঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নেয় দক্ষিণরায়। এমন ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে রাতেই সে খাঁচাবন্দি হওয়ায় আপাতত নিশ্চিন্ত এলাকার বাসিন্দারা।

উল্লেখ্য, গত বেশ কয়েকদিন ধরে বারবার সুন্দরবন এলাকায় লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়াকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কুলতলি, চরগেরি, কুমিরমারির মতো গ্রামে ঢুকে পড়েছিল বাঘ। তাদের বাগে আনতে রীতিমতো কালঘাম ছোটে বনকর্মীদের। কখনও ঘুম পাড়ানি গুলি মেরে তো কখনও জাল ফেলে জঙ্গল ভিজিয়ে বাঘকে খাঁচাবন্দি করতে হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version