কলকাতা ব্যুরো: কাঁকসায় দেউলের জঙ্গলকে কেন্দ্র করে ডে কেয়ার সেন্টার উদ্বোধন হলো শুক্রবার। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাওয়া প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে ট্রেকারদের কাছে। ট্রেকিং করে আসা মানুষরা পরিশ্রান্ত হয়ে যাতে এখানে এসে বিশ্রাম নিতে পারেন এবং পছন্দসই খাবার পেতে পারেন তার ব্যবস্থা হল এদিন। একটি ক্যান্টিনের উদ্বোধন করা হয়।বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বস্ত করেন, আগামী দিনে দেউলের জঙ্গলকে কেন্দ্র করে রাত কাটানোর জন্য ছোট ছোট তাবু বা কটেজ করার ব্যাপারে ভাবনা চিন্তা করবে বনদপ্তর। সে ক্ষেত্রে কলকাতা থেকে মাত্র দুশো কিলোমিটার দূরে এমন একটি প্রাকৃতিক পরিবেশে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষ রাত কাটানোর সুযোগ পেয়ে যাবেন। জঙ্গলের গা দিয়ে বয়ে যাওয়া অজয়ের খাল সংস্কার করে পর্যটকদের আরো বেশি মনোরঞ্জনের জন্য আগামীতে নজর রয়েছে বনদপ্তরের।
দুর্গাপুরের কাছেই কাঁকসার গড় জঙ্গল নামে পরিচিত এই জায়গাটিতে এখন হরিণ, ময়ূর সহ বিভিন্ন রকম পাখির বাস। এখানকার বনদপ্তর এর শিবপুর বিট অফিস থেকে জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে শ্যামা রুপার মন্দির হয়ে হয়ে দেউইল পর্যন্ত চলে যাওয়া যায়। এই ১০ কিলোমিটার রাস্তাটি এখন ট্রেকারদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান।যেভাবে শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরির জঙ্গলের মধ্যে সপ্তাহে নিয়ম করে হস্তশিল্পের হাট বসে, এখানেও ডে কেয়ার সেন্টার লাগোয়া জায়গায় তেমনি হস্তশিল্প বিক্রির কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও আদিবাসীদের তৈরি হস্তশিল্প এই জায়গায় বিক্রির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিন মন্ত্রী জানান, জঙ্গলকে যাতে আরও ভালোভাবে মানুষ উপলব্ধি করতে পারেন, সে কারণে চারটি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করা হবে। নিরিবিলিতে শুধু পাখির ডাক এর মধ্যেই সেইসব ওয়াচ টাওয়ারে উঠে মানুষ সবুজের মধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে পারবেন। এখানে একটি মিউজিয়াম তৈরি পরিকল্পনা করা হয়েছে। বনদপ্তর এর দক্ষিণ পূর্ব শাখার মুখ্য বনপাল কল্যাণ দাস জানিয়েছেন, এখানে এমন গাছ রয়েছে যা আয়ুর্বেদ ওষুধের অন্যতম আকর। শুধু পর্যটন নয়, আগামী দিনে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের এইসব গাছ চেনানোর জন্য যাতে উদ্যোগ নেওয়া যায় সে ব্যাপারেও চেষ্টা করবে বনদপ্তর। এই এলাকার আদিবাসী যুবকরা এখানে একদিকে যেমন ক্যান্টিন চালাবেন, একইসঙ্গে তাদের গাইড হিসেবে কাজে লাগানোর জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে পরিকল্পনা রয়েছে বনদপ্তরের।এর সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীতে রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে এখানে আদিবাসী গ্রামগুলিতে হোম স্টে করার ব্যাপারেও উৎসাহ দিতে চায় বনদপ্তর।