কলকাতা ব্যুরো: গতি বাড়িয়ে আরো সম মতো ট্রেন চালাতে বড়োসড়ো পরিবর্তনের পথে হাঁটছে ভারতীয় রেল। নতুন টাইম টেবিল অনুযায়ী আগামী দিনে ১০ হাজার ২০০ হল্ট স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ানো বন্ধ করে দেওয়া হবে এক্সপ্রেস এর ক্ষেত্রে। একইসঙ্গে ট্রেনকে প্যাসেঞ্জার থেকে এক্সপ্রেসে’ রূপান্তরিত করা হবে। এইভাবে বছরে আরও প্রায় দুট হাজার কোটি টাকা বাড়তি আয়ের লক্ষ্য নিয়ে নতুন টাইম টেবিল প্রকাশ করা হচ্ছে। যদিও রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ভিকে যাদব বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে বলেছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন টাইম টেবিল অনুযায়ী ট্রেন চালানো হবে। কিন্তু যদি সেই সময়ের মধ্যে করোনা পরিস্থিতি পার করে গোটা দেশে স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে তারপরে নতুন টাইম টেবিল অনুযায়ী রেল চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রেলের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রায় ৬০০ প্যাসেঞ্জার ট্রেন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে ১০ হাজার ২০০ স্টেশন এবং ১৬০০ রাতের স্টপেজ দেওয়া স্টেশনে ট্রেন আর দাঁড়াবে না।
নতুন টাইম টেবিল অনুযায়ী বর্তমানে ৪৬০০ টি ট্রেন মেল, এক্সপ্রেস, প্রিমিয়াম, সুপারফাস্ট এবং লোকাল হিসেবে চলাচল করে। যার মধ্যে ৬৮৬ টি ট্রেনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেগুলি অন্য কোন গ্রেডে উন্নত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ৩৬৩ টি লোকাল/ প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে মেল বা এক্সপ্রেস এ উন্নীত করা হবে। ১২০ টি এক্সপ্রেস ট্রেন, সুপারফাস্ট উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রেলের হিসেব অনুযায়ী, গড়ে মেল এক্সপ্রেস ট্রেন ৪৫ কিলোমিটার ঘন্টায় গতিবেগে চলাচল করে, সেইগুলি যখন সুপারফাস্ট হয়ে যাবে তখন তা ঘন্টায় ৫৫ কিলোমিটার গতিবেগে চলবে । গন্তব্যে পৌঁছানোর সময় কমে যাবে।
বহুদিন ধরে রেলের ক্ষেত্রে একটি ট্রেন মূল স্টেশন থেকে যাওয়ার পর নির্দিষ্ট কোন জংশন স্টেশন থেকে তার বগি কেটে, পকেট কোন স্টেশনে উদ্দেশ্যে যাত্রা করানো হয়। এর ফলে যাত্রীদের সেই কো চ থেকে নামা বা অন্য ট্রেন ধরার প্রয়োজন হয় না। এখন নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই সব লাইনগুলোর পরিবর্তে যাত্রী ঠিকঠাক হলে সে ক্ষেত্রে নতুন ট্রেন দিয়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হয়েছে।
এই গোটা কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়িত্ব সমাধান করেছে আইআইটি মুম্বাই। তাদের সঙ্গে রেলের সি আর আই এস সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান বাস্তবে তা কার্যকর করতে নেমে পড়েছে। রেল কর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, নতুন টাইম টেবিল লাইভ করার ক্ষেত্রে টিকিটের আপগ্রেডেশন সবচেয়ে আগে দরকার। একইসঙ্গে নতুন টাইম টেবিল মেনে ট্রেন চালানোর জন্য কেবিন থেকে শুরু করে সর্বত্রই তা প্রশিক্ষণের মধ্যে আনার প্রয়োজন রয়েছে। তাই এখন থেকে অন্তত দেড় মাস পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ১ ডিসেম্বর নতুন টাইম টেবিল কার্যকর করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।