কলকাতা ব্যুরো: যে শহর এক সময় গুজরাটে দাঙ্গা পীড়িতদের মুখ কুতুবউদ্দিন আনসারীকে নিরাপদে থাকার জায়গা দিয়েছিল, সে শহরে দাড়ি আর ফেজ টুপি পরা শিক্ষকদের বিতাড়িত করতে পারে? এমন ঘটনা ঘটতে পারে! সল্টলেকে ডিএল ব্লকের সোমবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমনই আলোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে।সল্টলেকের ডিএল ব্লকের একটি গেস্ট হাউসে ঘর বুক করে আসা তিন মাদ্রাসার শিক্ষককে যেভাবে কিছুসময়ের মধ্যেই ঘর ছাড়তে বাধ্য করা হয়, তা নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে নানা মহলে।সিপিএমের নেতা মহাম্মদ সেলিম এই ঘটনায় অবিলম্বে অভিযুক্ত গেস্টহাউস কর্তৃপক্ষকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। আবার ভাষা ও চেতনা সমিতি মঙ্গলবার বিকেলে ওই ঘটনার প্রতিবাদে সল্টলেকে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। আবার এমন ভাবে তিন শিক্ষককে গেস্ট হাউজ থেকে বের করে দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে শিক্ষক মঞ্চের তরফ এ গোটা ঘটনার তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
যে ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তা নিয়ে এদিন বিকেলের পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।এদিন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম তার ফেসবুকে যা লিখেছেন তা এইরকম, আগে থেকে কথা বলে টাকা পয়সা দিয়ে ডিএল ব্লকের একটি গেষ্ট হাউসে ঘর বুক করে রেখেছিলেন তিনজন শিক্ষক। ভোর ছ’টা নাগাদ তারা সল্টলেকের ওই গেস্ট হাউসে পৌঁছন। আধার কার্ড এপিক সহ ইত্যাদি দেখিয়ে রেজিস্ট্রি খাতাই তারা নাম লেখান। এরপর তারা স্নান সেরে পাশের সিজে ব্লক এ যান সকালের খাবার খেতে।সেখান থেকে ফিরে আসার পরেই তাদের গেস্ট হাউজের ম্যানেজার জানান, ঘর ছেড়ে দিতে হবে। ম্যানেজার এর বক্তব্য, ওই শিক্ষকদের দাঁড়ি আছে এবং তারা ফেজ টুপি পরিহিত। তাই এলাকার মানুষ তাদের থাকতে দিতে আপত্তি করছে। প্রথমে জোরাজুরি করলেও এক সময় শিক্ষকরা ঘর ছাড়তে বাধ্য হন।কলকাতার বুকে এমন ঘটনায় রীতিমতো লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে সুস্থ মানসিকতার নাগরিকদের। যে কলকাতায় একসময় গুজরাটের দাঙ্গা বিধস্ত এলাকার কুতুবউদ্দিন কে নিরাপত্তা দিতে ডেকে এনেছিল সে শহরে এমন ঘটনা কতটা সত্যি, বা না কি অকারণ আতঙ্কের বহিঃপ্রকাশ — আলোচনা শুরু হয়েছে তা নিয়েও।