কলকাতা ব্যুরো: আনিস খানের মৃত্যুর প্রতিবাদে অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির দাবিতে অন্যান্যদিনের মতো শনিবারও পথে নামলো ছাত্র যুবরা। বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাওড়ার পাঁচলা। শনিবার হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অভিযান চালান SFI, DYFI সদস্যরা। পুলিশ বাধা দিলে হাতাহাতি বাধে। পাঁচলা এলাকার রাস্তাঘাটে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভের আঁচ। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে ঘটনাস্থলে ছুটে আসতে হয় দক্ষিণবঙ্গের ডিআইজি সিদ্ধিনাথ গুপ্ত।

অভিযোগ, মিছিল থেকে ছোঁড়া ইটের আঘাতে জখম হন কয়েকজন পুলিশকর্মী। ভাঙে পুলিশের গাড়ির কাচও। এরপরই DYFI রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, সভাপতি সৃজন ভট্টাচার্য-সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিন পাঁচলা এসপি অফিসের সামনে পুলিশকে লক্ষ্য করে চলতে থাকে লাগাতার বোতল ও ইট পাথর বৃষ্টি। ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। পালটা বিক্ষোভকারীদের রুখতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। জমায়েত থেকে এসপি অফিস লক্ষ্য করে চলে লাগাতার বোমাবাজি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চার্জ পুলিশের।

শনিবার রানিহাটি থেকে পাঁচলায় পুলিশ সুপারের অফিস পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেয় বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। সেইমতো মিছিল পাঁচলায় পৌঁছতেই পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে ওঠে। পুলিশের ব্যারিকেডের বাধায় ক্ষোভের আগুন আরও তীব্র হয়। শুরু হয় ইটবৃষ্টি। অভিযোগ, পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে যে পুলিশ কর্মীরা দাঁড়িয়েছিলেন তাঁদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। এরপরই পাল্টা পুলিশও প্রতিরোধে নামে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি।

ইট বৃষ্টির ঘটনায় একাধিক ছাত্র নেতা জখম হন বলে জানা গিয়েছে। একইভাবে আহত হয়েছেন একাধিক পুলিশ কর্মীও। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটায় বলে অভিযোগ ওঠে। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জাতীয় সড়কও। এরপরই বিশাল পুলিশ বাহিনী নামানো হয় রাস্তায়। শুরু হয় লাঠিচার্জ বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীরা হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের পাইলট গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এমনকী তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ।

অন্যদিকে, এদিন কলকাতার রাজপথেও আনিসের মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে মিছিলে নামে সিপিএম। সামনের সারিতে পা মেলান বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্ররা। বিমান বসু জানান, ছাত্রনেতার মৃত্যুতে প্রশাসনের উপর মহলের হাত রয়েছে। তা মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট। সেসব দোষীদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।
আনিস খানের মৃত্যুর প্রতিবাদে প্রতিদিনই প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির ছবি দেখা গেলেও, শনিবার পাঁচলার পরিস্থিতি আর পাঁচটা দিনের থেকে অনেকটাই আলাদা।