কলকাতা ব্যুরো: মাত্রাছাড়া কোভিড সংক্রমণের কারণে দিল্লিতে মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হলো বেসরকারি অফিস। বন্ধ করে দেওয়া হলো বার, রেস্তরাঁর দরজাও। কার্যত লকডাউনের চেহারায় ফিরে গেলো দিল্লি। বলা হয়েছে, কেবলমাত্র জরুরি ভিত্তিক অফিসগুলি খোলা থাকবে। বাকি সব অফিস বন্ধ থাকবে। এর আগে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস চালানোর অনুমতি দিয়েছিল দিল্লি সরকার। কিন্তু তা এ বার পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হলো। তবে শুধুমাত্র হোম ডেলিভারি বা বাড়ি নিয়ে গিয়ে খাবার খাওয়ার অনুমতি মিলেছে।

দিল্লিতে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, যে সমস্ত বেসরকারি অফিস জরুরি পরিষেবা প্রদান করে, সেই অফিসগুলি বাদ দিয়ে বাকি সব অফিস বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া বন্ধ থাকবে বার, রেস্তরাঁও। বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশিকাও দিয়েছে কেজরিওয়াল সরকার। এ বিষয়ে সরকারকে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। সোমবারই দিল্লিতে রেস্তরাঁ বন্ধের নির্দেশ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন ব্যাবসায়ীরা।

জাতীয় রেস্তরাঁ সংগঠনের সভাপতি কবীর সুরি জানিয়েছেন, নয়া গাইডলাইন প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানে গভীর প্রভাব ফেলবে। দিল্লির রেস্তরাঁ-পানশালাগুলিতে এত সংখ্যক মানুষ কাজ করে। তাঁদের রুটি-রুজিতে টান পড়বে। এই বেকারত্ব দীর্ঘায়িত হবে কারণ কতদিন এভাবে চলবে আমরা কেউ জানি না। তিনি জানিয়েছেন, গত বছর প্রায় ২৫ শতাংশ রেস্তরাঁ বন্ধ হয়েছিল, যার ফলে ২৪ লক্ষ মানুষ কাজ হারান।

তিনি আরও জানিয়েছেন, দিল্লিতে রেস্তরাঁয় খেতে আসা মানুষের সংখ্যা দেশের মধ্যে অনেক বেশি। গোটা দেশে যা ৪.৫ বার প্রতি মাসে, তা দিল্লিতে প্রায় মাসে ৬ বারের বেশি। এখানে হোম ডেলিভারি বা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে খাওয়ার গ্রাহকের সংখ্যা ন্যূনতম।

দিল্লিতে ক্রমে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কে ভুগতে বারণ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু তিনি এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ঢিলেমির কোনও স্থান নেই কারণ, সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে না পারলে ভবিষ্যতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার বাড়বে না, এ কথা স্পষ্ট করে বলা যায় না। তাই এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে সাধারণ মানুষকে।

সোমবার দিল্লির স্বাস্থ্য মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানান, আরও কয়েকদিন মধ্যে সংক্রমণের শীর্ষে পৌঁছে যাবে দিল্লি। সত্যেন্দ্র জৈন বলেন, আমরা মনে করছি, করোনা সংক্রমণের শীর্ষে প্রায় পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে পুরোটা স্পষ্ট হবে। তার পর থেকে সংক্রমণ পড়তে শুরু করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সংক্রমণের হার কমাতে একটি কার্ফু জারি করতেও হতে পারে। তাঁর কথাই সত্যি হল মঙ্গলবার। কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেল দিল্লির দৈনিক কার্যকলাপ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version