কলকাতা ব্যুরো: বৃষ্টির রেশ কাটতে না কাটতেই আগুন বাজার। শাকসব্জির দাম এমনিতেই গত কয়েকদিন ধরেই বেশ চড়া। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো দোসর হয়েছে আলুর দামও। গত এক সপ্তাহে আলুর দাম কেজি প্রতি ৬ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে। একদিকে যেমন চাষিদের বিঘার পর বিঘা জমি জলের তলায় চলে যাওয়ায় তাঁদের মাথায় হাত। অন্যদিকে অনেকেই আবার ঋণ নিয়ে চাষ করেছেন। ফলে তা শোধ করবেন কীভাবে, তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না। এরকম অবস্থায় বাজারে কীভাবে আলুর দাম আচমকা এতটা বেড়ে গেলো, তার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে সল্টলেকের বিডি-ব্লকের বাজারে আলু প্রতি কেজি ২৬-২৭ টাকা দরে বিকোচ্ছে।
পাশাপাশি সবজির দাম নিয়েও নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। সবই যেন লাগামছাড়া। ফুলকপি, বাঁধাকপি, পিঁয়াজকলি—সবই মিলছে বাজারে। কিন্তু তাতে হাত দেওয়া যাচ্ছে না কারণ দামের ছ্যাঁকা লাগার জোগাড়। সবজির দাম চড়ে যাওয়ায় বাজারে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগেই টমেটোর দাম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ছিল। এখন একটু কমলেও তা নাগালের বাইরে। সঙ্গে কড়াইশুটি–পিয়াঁজকলির দামও আকাশছোঁয়া। এখন মাছ–মাংসের পাশাপাশি সবজির দর বেশি হওয়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে মধ্যবিত্তের।
সাধারণ মধ্যবিত্তের অভিযোগ, ফের বাজার নিয়ন্ত্রণে নেমেছে ফোড়েরা। তারাই এই বৃষ্টির অজুহাত খাড়া করে আলুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। চাষিরা হাতে এক পয়সাও পাচ্ছেন না, অথচ লাভের গুড় খেয়ে যাচ্ছে ওই মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা। তবে বিভিন্ন দিক থেকে অভিযোগ জোরদার হওয়ায় এবার নড়েচড়ে বসলো এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (EB)। সল্টলেকের বিভিন্ন বাজারে হানা দিলেন ইডি-র আধিকারিকরা। শনিবার সল্টলেকের বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালান তাঁরা। সল্টলেকের বিডি মার্কেট, বৈশাখী সহ একাধিক বাজারে হানাদারি চলে। বাজারে কোন জিনিসের কী দাম নেওয়া হচ্ছে, সেই বিষয়ে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা।
বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় দাম বেড়েছে আলুর, এমনটাই দাবি বিক্রেতাদের। তবে সল্টলেকের বিভিন্ন বাজারে আলুর বিভিন্ন দাম দেখে বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের অধিকারিকরা। এছাড়াও মাস্ক ছাড়া যাতে বিক্রেতারা দ্রব্য বিক্রি না করেন, সেই বিষয়েও সবাইকে সচেতন করা হয়।
তবে ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, আলু উৎপাদন করে চাষিরা যেভাবে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন, সেদিকেও নজর দেওয়া সরকারের কর্তব্য কারণ, বাজারে আলুর দাম আরও আকাশছোঁয়া হবে, অথচ চাষিরা তার সুফল পাবেন না, এতে বৈষম্য আরও বাড়বে। চাষিরা ধীরে ধীরে আরও অতলে তলিয়ে যাবেন।
এখন দেখা যাক বাজারে কোন সবজির দাম কত-
সবজির পাইকারি দাম:
জ্যোতি আলু–১৮ টাকা প্রতি কেজি,
বেগুন– ৪০ টাকা প্রতি কেজি
বাঁধাকপি- ২০ টাকা কেজি
টমেটো–৭০ টাকা প্রতি কেজি
পিঁয়াজকলি- ৮0 টাকা প্রতি কেজি
খুচরো বাজারে সবজির দাম:
চন্দ্রমুখী আলু– ২৫ থেকে ২৭ টাকা প্রতি কেজি
জ্যোতি আলু- ২২ টাকা প্রতি কেজি
বাঁধাকপি- ৪0 টাকা কেজি
পটল- ৪০ টাকা প্রতি কেজি
পিঁয়াজকলি- ১২০ টাকা প্রতি কেজি
লঙ্কা – ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি
শশা – ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি
বেগুন – ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি