কলকাতা ব্যুরো: বাজি নিষিদ্ধ করার হাইকোর্টের নির্দেশ কালীপুজোর রাতে উতরে দিল পুলিশ। ওয়ান ডে এই গেমে এদিন প্রথম থেকেই রাশ নিজেদের হাতে রেখেছিল পুলিশ বাহিনী। রাত বারোটা পর্যন্ত কলকাতা ও বিধান নগর সিটি পুলিশের এলাকায় হাইকোর্টের নির্দেশ পালন হয়েছে বলা যেতে পারে। তবে একেবারে কোথাও বাজি ফাটেনি তা যেমন বলা যাবে না, আবার তেমনই অন্যান্যবারের মতো রাত বাড়তেই বাজির উপদ্রব বাড়ার তেমন বড় কোন অভিযোগ কোন জায়গা থেকেই পায়নি পুলিশ বা পরিবেশ দপ্তর।
এদিন বিকেলের পর থেকেই অবশ্য তৎপরতা ছিল কলকাতার ও বিধান নগর পুলিশের। কিন্তু যেসব এলাকায় অন্যান্যবার সন্ধ্যের আগে থেকেই বাজি ফাটিয়ে এলাকাবাসী জানান দেয় কালীপুজোর, উল্লেখযোগ্যভাবে এবার সেই সব এলাকা ছিল সন্ধ্যে থেকে অনেকটাই চুপচাপ। কলকাতা বেলেঘাটা, ভবানীপুর, যাদবপুর, তিলজলা, গড়িয়াহাট কোনও জায়গা থেকে তেমন বাজির উপদ্রব ছিলই না, শব্দবাজির আওয়াজও তেমনভাবে পাওয়া যায়নি।তবে রাত নটা বাজার পর থেকে কিছু এলাকায় খোলস থেকে বেরিয়ে আসে বাজি। যাদবপুর, সন্তোষপুর, বঙ্গুর, বেহালা, লেকটাউন, কসবা, লেকটাউন, আরজিকর হাসপাতাল চত্বর থেকে পরিবেশ দপ্তর ও পুলিশের কাছে শব্দ বাজি নিয়ে অভিযোগ গিয়েছে। প্রায় সর্বত্রই দ্রুত পৌঁছে গিয়েছে পুলিশ। এ দিন রাত পর্যন্ত কোথাও বাজিকে কেন্দ্র করে কোনো রকম গোলমাল বা হাঙ্গামার খবর পাওয়া যায়নি।এদিন বেশি রাতে কলকাতা পুলিশ জানায়, বাজি ফাটানোর অভিযোগে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রায় এক হাজার কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে শুধু সন্ধ্যের পর। একইভাবে বিধান নগরেও ৮০ জনকে আটক করা হয়েছে। প্রায় ২০০ কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, মূলত দমদম লেক টাউন বাগুইআটি এলাকা থেকে।
অন্যান্যবার রাত বাড়তেই বাজির তান্ডব পাল্লা দিয়ে বাড়ে। কিন্তু এবার হাইকোর্টের নির্দেশ হাতিয়ার থাকায় পুলিশের পক্ষে অনেক বেশি বাজি নিয়ে কঠোরতা দেখানোর সুবিধা হয়েছে বলে মনে করছেন বহু অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার। তবে তারা এটাও মানছেন করোনা আবহে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় নাগরিকদের একটা অংশ সচেতন হওয়াতেই এবার কোনমতেই বিষয়টি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি পুলিশকে। ফলে রাত বারোটা পর্যন্ত শহর এবং শহরতলীর পরিস্থিতি দেখে অনেকেই মনে করছেন, এবার হাইকোর্টের নির্দেশ সঙ্গী করে বাজি জব্দ করতে পুলিশি যথেষ্ট ভাল ভূমিকা নিতে পেরেছে।