কলকাতা ব্যুরো: গড়িয়াহাট জোড়া খুনের ঘটনায় গ্রেফতার আরও দুই অভিযুক্ত। শুক্রবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার বুড়োবুড়ির তট থেকে দু’জনকে আটক করে লালবাজারের হোমিসাইড শাখার পুলিশ। ধৃতদের নাম জাহির গাজি (বয়স ২৭) এবং বাপি মণ্ডল (বয়স ৩০)। তারা দু’জনেই ডায়মন্ড হারবার থানা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে খবর, গড়িয়াহাট জোড়া খুনের ঘটনায় সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে জাহির ও বাপির। যদিও ধৃতদের পরিবারের সদস্যদের দাবি, কাজের টোপ দিয়ে জাহির ও বাপিকে গড়িয়াহাটের কাকুলিয়া রোডের ওই বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল বাড়ির পরিচারিকা মিঠু হালদার। এদিন ধৃত দু’জনকেই পাথরপ্রতিমা থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানেই তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় তদন্তকারী আধিকারিকরা আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে পেয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জোড়া খুনের ঘটনায় মিঠু ও তার বড় ছেলে ভিকিই ছিল মূলচক্রী। জাহির ও বাপি ছাড়াও এই খুনের ঘটনায় আরও এক ব্যক্তি যুক্ত রয়েছে বলে মনে করছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যেই সেই তৃতীয় ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে, পলাতক ভিকিরও সন্ধান চালানো হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, জাহির, বাপি সহ ওই তৃতীয় ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার টোপ দিয়েছিল মিঠু। কলকাতার কর্মস্থলে যাতায়াতের জন্য প্রতিদিন লোকাল ট্রেনে সওয়ার হত সে। ট্রেনেই জাহির ও বাপির সঙ্গে আলাপ হয় মিঠুর। এমনকী, বেশ কয়েকবার বাপির বাড়িতেও গিয়েছিল মিঠু।
বাপির স্ত্রী বন্দনার দাবি, কাজের লোভ দেখিয়ে তাঁর স্বামীকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিল মিঠু। একইভাবে জাহিরকেও ফাঁসিয়েছিল সে। গত রবিবার রাতে মিঠু, বাপি ও জাহির একসঙ্গে একই ট্রেনে বাড়ি ফেরে। সেদিন বাপির চোখে, মুখে আতঙ্কের ছাপ ছিল বলে জানিয়েছে বন্দনা। তাঁর দাবি, বাপি কাউকে খুন করেনি। তবে ঘটনা ঘটতে দেখেছিল সে। এরপরই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বাপি। পরে, জোড়া খুন নিয়ে চারিদিকে হইচই শুরু হতে আবার বাড়ি ফিরে আসে সে।
এরপর গত মঙ্গলবার পাথরপ্রতিমায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করে বাপি। সঙ্গে ছিল জাহিরও। বৃহস্পতিবার রাতে লালবাজারের প্রতিনিধিরা ওই বাড়ি থেকেই বাপি ও জাহিরকে পাকড়াও করেন। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। যদিও দু’জনেরই পরিবারের দাবি, ধৃতরা নির্দোষ, মিঠু তাদের ফাঁসিয়েছে।