কলকাতা ব্যুরো: ভারতে করোনার টিকাকরণের একবছর পূর্ণ হল রবিবার। এই দিনেই স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকদের করোনার টিকা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আর সাফল্যের সঙ্গে টিকাকরণের একবছর পূর্ণ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের সব চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এদিন করোনার টিকাকরণের একবছর পূর্তি উপলক্ষে মোদী জানান, ভারতের এই টিকাকরণ অভিযান করোনার বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও শক্তিশালী করেছে। তিনি বলেন, আজকে আমরা টিকাকরণ অভিযানের একবছর পূরণ করলাম। সেই সকল ব্যক্তিকে আমার কুর্নিশ, যাঁরা এই টিকাকরণ অভিযানে সহায়তা করেছেন। এই টিকাকরণ অভিযান করোনার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইকে আরও শক্তিশালী করেছে। মানব জীবনকে বাঁচাতে এবং জনজীবনকে সচল রাখতে এটি আমাদের সাহায্য করেছে।

তবে এখানেই থামেননি মোদী। করোনার টিকাকরণের একবছর উপলক্ষ্যে পরপর চারটি টুইট করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর দ্বিতীয় টুইটে লেখেন, প্রথম যখন করোনা অতিমারি আমাদের আঘাত করল, আমরা এই ভাইরাস সম্পর্কে বিশেষ কিছুই জানতাম না, তা সত্ত্বেও আমাদের বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা এর প্রতিষেধক তৈরি করার জন্য ব্রতী হয়েছিলেন। টিকার মাধ্যমে এই অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের দেশ অবদান রাখতে পেরেছে, তার জন্য ভারত গর্বিত বোধ করছে।

মোদী তাঁর তিন নম্বর টুইটে দেশের চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি জানান, দেশ তাঁর চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে গর্বিত বোধ করে। তিনি বলেন, একই সঙ্গে আমাদের চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকাও অসাধারণ। যখন আমরা দেখি প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলের লোকজন টিকা নিচ্ছেন, অথবা স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে টিকা নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন। সেই দৃশ্য দেখে আমরা হৃদয় থেকে গর্ব অনুভব করি।

মোদী তাঁর শেষ টুইটে জানিয়েছেন, অতিমারির বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই সর্বদা বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করে এগিয়েছে। এদিন মোদী দাবি করেন, ভারতের সকল নাগরিক যাতে স্বাস্থ্য পরিষেবা পায়, তার জন্য সরকার প্রতিনিয়ত পরিকাঠামোর উন্নতি করে গিয়েছে। আর সব শেষে নাগরিকদের কাছে মোদি আবেদন জানান, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকলে যেন কোভিডবিধি মেনে চলে।

পাশাপাশি এদিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য একটি টুইট করে করোনার টিকাকরণের একবছর উপলক্ষ্যে দেশের বিজ্ঞানী এবং নাগরিকদের শুভেচ্ছা জানান। সেইসঙ্গে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি শুরু হওয়া করোনার টিকাকরণ অভিযানে ধাপে ধাপে সাধারণ মানুষকে এর সঙ্গে যুক্ত করেছিল সরকার। প্রথম ধাপে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী। এরপরের ধাপে পুলিশ এবং জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত লোকজন। তৃতীয় ধাপে ৬০ বছর ও তার বেশি বয়সী নাগরিকদের জন্য এবং কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন নাগরিকদের ক্ষেত্রে। এরপর ৪৫ বছরের উপরে টিকাকরণ শুরু করে ভারত সরকার। এরই মাঝে বিশ্বের বহু দেশে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকা পৌঁছে দিয়েছে ভারত।

এই পর্যায়ে দীর্ঘ বেশ কয়েকমাস টিকাকরণ হওয়ার পর, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার মধ্যেই প্রাপ্ত বয়স্কদের করোনার টিকাকরণ শুরু করে ভারত সরকার ৷ সম্প্রতি গত ডিসেম্বর মাস থেকে ১৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে করোনার টিকাকরণ শুরু হয়েছে আমাদের দেশে। তারই মধ্যে গত ৬ জানুয়ারি থেকে করোনার বুস্টার ডোজও শুরু হয়েছে ৷ চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৬০ ও তার বেশি বয়সীদের জন্য ৷ রবিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভারতে ১৫৬ কোটি ৭৬ লক্ষ ১৫ হাজার ৪৫৪টি ডোজ দেওয়া হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version