কলকাতা ব্যুরো: সোমবার পিএম-কিষান প্রকল্পের অধীনে দেশের কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৷ এবার টাকা পেলেন দেশের ৯.৭৫ কোটি উপভোক্তা ৷ দেওয়া হলো ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ৷ সোমবার কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর পর ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী ৷ পাশাপাশি পিএম কিষান সম্মান নিধির দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ঢুকেছে বাংলার চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও। যদিও এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য বাংলার যে সংখ্যক কৃষকেরা আবেদন জানিয়েছিলেন, তার প্রায় এক তৃতীয়াংশ চাষিরা দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ। আর তা নিয়েই নতুন করে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত শুরু হয়েছে। একদিকে, নথিভুক্ত চাষিদের তথ্য সঠিকভাবে যাচাই না করার জন্য বিজেপি রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলছে। অন্যদিকে, তথ্য যাচাইয়ের পরও বেশ কিছু নাম বাদ পড়ায় রাজ্য পাল্টা অভিযোগের আঙুল তুলছে বিজেপির দিকে।
প্রসঙ্গত, সোমবার দেশের মোট ৯.৭৫ কোটি চাষিদের ব্যাঙ্ক আক্যাউন্টে দু-হাজার টাকা করে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মে মাসের পর আগস্ট মাসে দ্বিতীয়বার এই সুবিধা পেলেন বাংলার চাষিরা। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ লক্ষ চাষির অ্যাকাউন্টে এই টাকা এসেছে। যদিও মে মাসে বাংলায় প্রথম কিস্তির সুবিধা পেয়েছিলেন মাত্র ৭ লক্ষ চাষি। বর্তমানে রাজ্যে আবেদনকারী চাষির সংখ্যা ৬৮ লক্ষের বেশি অর্থাৎ দ্বিতীয় কিস্তিতে কেন্দ্রের সাহায্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ৪২ লক্ষের বেশি চাষি। কিন্তু দায় কার? এই নিয়েই শুরু দুই শিবিরের মধ্যে কাদা ছোড়াছুঁড়ি খেলা।।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, রাজ্যের গড়িমসির কারণেই এতদিন এই প্রকল্পের টাকা থেকে বঞ্চিত থেকেছেন চাষিরা। যেহেতু এই টাকা সরাসরি চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যায় এবং এখানে কোনও কাটমানি নেওয়ার সুযোগ নেই, তাই এতদিন পর্যন্ত এই প্রকল্পের সুবিধা এ রাজ্যের চাষিরা পাননি বলে দাবি তাঁর।
একই সঙ্গে অপর একটি টুইটে তিনি দাবি করেছেন, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনও আবেদনকারী চাষিদের সমগ্র তথ্য যাচাই করে দেওয়া হয়নি। আর সেই কারণে চাষিদের বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে।
তবে এর পাল্টা দিয়েছে রাজ্যও। রাজ্যের পাল্টা দাবি, এখনও পর্যন্ত মোট ৪৪ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৩১ চাষিদের তথ্য যাচাই করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে ৯ লক্ষ ৪৭ হাজার ৮৬১ জন কৃষকের নাম বাদ দিয়েছে কেন্দ্র। যা নিয়ে প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। কী কারণে এই নামগুলি বাদ পড়ল, তা জানতে চেয়ে রাজ্যের কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকে একটি কড়া চিঠিও পাঠানো হয়েছিল গত ৩ আগস্ট। তারপরেও কেন এমন ঘটনা ঘটলো? প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য।