কলকাতা ব্যুরো: তথ্যপ্রযুক্তির শীর্ষস্তরে ক্রমেই ‘প্রভুত্ব’ বাড়ছে ভারতীয় কিংবা ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের। মাইক্রোসফটের সত্য নাদেল্লা এবং গুগলের সুন্দর পিচাই তো ছিলেনই, এবার টুইটার সংস্থার সিইও পদের দায়িত্ব পেলেন পরাগ আগরওয়াল।
সোমবারই পদত্যাগ করেছেন প্রাক্তন সিইও জ্যাক ডর্সি। মাত্র ৩৭ বছর বয়স পরাগের। বিশ্বজুড়ে সেরা ৫০০টি সংস্থার সিইওদের মধ্যে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ। পরাগের জন্মতারিখ খোলসা না করা হলেও মেটা প্লাটফর্ম-এর সিইও মার্ক জুকারবার্গের চেয়ে তাঁর বয়স কম বলে জানানো হয়েছে। জুকারবার্গের জন্ম ১৯৮৪ সালের ১৪ মে।
পরাগকে অভিনন্দন জানিয়ে ডর্সি টুইট করে লিখলেন, টুইটারের সিইও হিসেবে আমি পরাগকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করি। গত ১০ বছর ধরে ওর কাজ সবকিছু বদলে দিয়েছে। এবার সময় হয়েছে ওর নেতৃত্ব দেওয়ার।
২০১১ সাল থেকেই টুইটারের সঙ্গে জড়িত আইআইটি বম্বের প্রাক্তনী। ২০১৭ সালে মাইক্র-ব্লগিং সাইট টুইটারের চিফ টেকনোলজি অফিসার পদে বসেন পরাগ। ছাত্র জীবনে অত্যন্ত মেধাবী বলে পরিচিত ছিলেন তিনি। মুম্বইয়ের স্কুলে পড়াশোনা করেছেন পরাগ। আইআইটি বম্বে থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে করেছেন বি.টেক। তারপর স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ডক্টরেট করেছেন।
২০০৬ সালের জুনে মাইক্রোসফ্টে যোগ দেন তিনি। তবে বেশিদিন সেই চাকরি করেননি তিনি। পরের বছর জুনে যোগ দিয়েছিলেন ইয়াহুতে। ১৬ মাস সেখানে কাটিয়ে মাইক্রোসফ্টে ফিরে আসেন তিনি। সেখানে চার মাস কাজ করে এটি অ্যান্ড টি ল্যাবে যোগদান করছিলেন। সেখানেও চার মাস কাজ করেছিলেন। তারপর ২০১১ সালের অক্টোবরে যোগ দেন টুইটারে।
এই বিরাট দায়িত্ব পালনের জন্য পরাগ আগরওয়ালকে বার্ষিক এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার পারিশ্রমিক দেবে টুইটার ৷ ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ৭.৫ কোটি ৷ সঙ্গে থাকছে ১২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের স্টক কমপেনসেশন ৷
এদিকে প্রাক্তন সিইও জ্যাক ডর্সি ইস্তফা দিতেই দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বলিউডের ‘কন্ট্রোভার্সি কুইন’ কঙ্গনা রানাওয়াত। জ্যাক ডর্সিকে ব্যঙ্গের সুরেই বিদায় জানালেন অভিনেত্রী। টুইটার সিইও বদলের খবরটি কঙ্গনা শেয়ার করেছেন নিজের ইনস্টাগ্রামের স্টোরিতে।
প্রসঙ্গত, জ্যাক ডর্সি সিইও থাকাকালীন টুইটার থেকে ঘাড়ধাক্কা খেয়েছিলেন কঙ্গনা। জ্যাকের বদলে পরাগ আগরওয়ালের সিইও হওয়ার খবরটি শেয়ার করে কঙ্গনা লিখেছেন, ‘বাই চাচা জ্যাক!’ সিইও বদলের ঘটনায়, বলাই বাহুল্য, উচ্ছ্বসিত কঙ্গনা।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণাত্মক পোস্ট করতেন কঙ্গনা। কৃষক আন্দোলন ঘিরেও নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তিনি। সেই সময় ঘৃণা ও হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে একবার টুইটারের তরফেই তাঁর অ্যাকাউন্ট লক করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর মমতাকে ‘গুন্ডা’ এবং ‘দানব’ আখ্যা দিয়ে মন্তব্য করেছিলেন কঙ্গনা। তারপরেই তাঁর অ্যাকাউন্ট চিরদিনের মতো সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। জ্যাক ডর্সি সিইও থাকাকালীন টুইটারের মুখপাত্র পোস্ট করে জানান, সোশ্যাল মিডিয়ার নিয়ম বারবার লঙ্ঘনের কারণে কঙ্গনার অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের কার্যকলাপ যেই করবেন, তাঁরা এক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবেন।