এক নজরে

সিঙ্গুরের বিরোধিতা অতীত, অশোকনগরে তেলের খনির কাজ শুরুতে কেন্দ্রের পাশে শাসক দল

By admin

November 21, 2020

কলকাতা ব্যুরো: সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম এখন অতীত। রাজ্যের শাসকের সহযোগিতায় অশোকনগরে শিল্পের আশায় বুক বাঁধছে সকলেই। উত্তর ২৪ পরগনা অশোকনগরে তেলের খনি খুঁজে পাওয়াকে কেন্দ্র করে এখন বড়োসড়ো কর্মযজ্ঞের আশায় গোটা এলাকা। আর কিছুদিনের মধ্যেই সেখানে খননকার্য পুরোপুরি শুরু হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।কলকাতায় বণিকসভা মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের বৈঠকে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী জানিয়েছেন, অশোকনগরে খনিজ তেলের যে বিপুল সম্ভার পাওয়া গেছে, বাণিজ্যিকভাবে তার ব্যবহার করা হবে। শুধু পেট্রোল নয়, প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান সেখানে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ইতিমধ্যেই সেখান থেকে তোলা তেল হলদিয়া সংশোধনাগারে পাঠিয়ে তার গুণমান খতিয়ে দেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।আর কয়েক দিনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীসহ দেশের শীর্ষ কর্তারা অশোকনগরে যাবেন এই নতুন তেলের খনি খতিয়ে দেখতে। তার আগে এখন সেখানে চলছে রাস্তা তৈরির কাজ। অশোকনগরের বাইগাছি মৌজার এখন হঠাৎই একটা অন্যরকম পরিবেশ। চারিদিকে যেন হঠাৎ কর্মযজ্ঞ শুরু হয়ে গিয়েছে।অথচ কয়েকবছর আগেও এই এলাকা ছিল পুরোপুরি গ্রাম। আর পাঁচটা গ্রামের মতোই চাষের জমিতে ফলেছে ধান। একেবারে গ্রামীণ আটপৌরে এলাকার পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে নৈহাটির রাস্তা। এই জায়গাতেই ওএনজিসি ২০০৯ সালে হঠাৎ করে খোঁজ পায় তেলের ভান্ডার। তারপরে দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অবশেষে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যে, দেশে নতুন তৈল খনির সন্ধান পাওয়া গেল অশোকনগরে। কিন্তু তখনও এই এলাকায় ছিল একটি ছোট কলোনি। সেই কলোনির বাসিন্দারা এলাকা ছাড়তে নারাজ ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক, পুরসভা, জেলা প্রশাসনের কাছে গিয়েছিল ওএনজিসি। তার পরেই যেন এক নতুন পথের সন্ধান।যে তৃণমূলের বিরোধিতায় সিঙ্গুর থেকে ন্যানো চলে গিয়েছিল, নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাব গড়তে পারেনি বাম সরকার, সেই তৃণমূল শাসন ক্ষমতায় থাকাকালীন পুরসভা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সেই কলোনি সরিয়ে বিকল্প জায়গায় তাদের ঘর দেওয়া হল। তারপরের টা এখনো পর্যন্ত ইতিহাস। দীর্ঘ খননকার্যের পর ২০১৮ সালে পেট্রোল এর পাশাপাশি প্রাকৃতিক গ্যাস এই খনিতে পাওয়া যায়।এক দশকের দীর্ঘ পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহযোগিতার পর অবশেষে অশোকনগরে হতে চলেছে দেশের অন্যতম তৈলখনির ভান্ডার। আর চাকরির আশা থাকায় স্থানীয় মানুষ নতুন করে জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিরোধিতায় যেতে নারাজ। অতএব মানুষের মন বুঝে শাসক দল আজ নিজেকে উন্নয়নমুখী প্রমাণে অন্তত নজির গড়েছে অশোকনগরের ক্ষেত্রে।