কলকাতা ব্যুরো: শ্যামনগর আদর্শপল্লীর এক বাড়ির নিচ থেকে উদ্ধার নর কঙ্কাল। বাড়ির মধ্যে থেকে নরকঙ্কাল উদ্ধারে চাঞ্চল্য উত্তর ২৪ পরগনার কাউগাছি ১ নম্বর পঞ্চায়েতের আদার্শপল্লী এলাকায়। এই রহস্য কাটাতে পিছিয়ে যেতে হবে ছয় বছর আগে। অর্থাৎ ২০১৪ সালে। আদর্শপল্লীর এই বাড়িতে তিন ভাইয়ের বসবাস। মা কিছুদিন আগে মারা যাওয়ার পর বাবা অন্য এক মহিলাকে নিয়ে অন্যত্র চলে যান। ফলে অভিভাবকহীন বাড়িতে খন্ডযুদ্ধ লেগে থাকে তিন ভাইয়ে।

এমনই নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-মারামারির মধ্যেই একদিন হটাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় বড় ভাই নিপু শীল। তারপর থেকে অন্য দুই ভাইকেও আর দেখতে পায়নি স্থানীয়রা। পাড়ার লোকও এই বাড়িতে অশান্তি বন্ধ হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পায়। ফলে ভাইয়েদের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে আর তেমন হইচই হয়নি। কিন্তু মানুষের বিবেকের দংশন বড় কঠিন জিনিস। যদি একবার সে দংশন শুরু হয় সে সত্যি প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কমে না।

শুক্রবার জগদ্দল থানায় গিয়ে দাদাকে খুন করে পুঁতে দেওয়ার কথা নিজেই কবুল করেন নিপুর মেজ ভাই। ঘটনার সময় নিপুর বয়স ছিল আনুমানিক ২৬ বছর এবং তার মেজ ভাইয়ের বয়স ২৪ ও ছোট ভাইয়ের বয়স আনুমানিক ২২। পাড়ার লোকের অভিযোগ তাদের বাড়িতে বচসা প্রায় লেগেই থাকত। ২০১৪ সালের শেষের দিকে হঠাৎই নিপু শীল ও ভাইয়েরা নিখোঁজ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পরে ঘরে ফিরে এদিন বাড়ি পরিষ্কার করতে গিয়ে হঠাৎ দাদাকে মেরে পুঁতে দেওয়ার জায়গায় গিয়ে বিবেক নাড়া দেয়।
নিজের ভুল উপলব্ধি করতে পারে নিপুর মেজ ভাই। জগদ্দল থানায় গিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে। থানার থেকে পুলিশ এসে মাটি খুঁড়ে তার বড় ভাইয়ের দেহ উদ্ধার করে জগদ্দল থানার পুলিশ। ছোট ভাইও দাদাকে খুনে হাত লাগিয়েছিল বলে জানায় মেজ ভাই। দুই ভাই মিলে বড় ভাইকে খুন করে বাড়ির মাটির বারান্দা খুঁড়ে পুতে দেওয়ার অপরাধে পুলিশ দুইভাইকেই গ্রেফতার করে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সাল ১০ই ডিসেম্বর বড় ভাই দিপু শীলকে খুন করে মেজো ভাই বাপী শীল। পরে ছোটো ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির মাটির বারান্দা খুড়ে বড় ভাই কে পুঁতে দেয়। এরপর ওরা ফেরার হয়েযায়। এদের মা ২০১৪ সালের আগে মারা যায়। বাবা-মা-র মৃত্যুর পর, বাবা আর এক মহিলাকে বিয়ে করে পালিয়ে যায। এই তিনভাই একদম একা হয়ে যায়।

মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে। দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকা দু’ভাই আসে দু’দিন আগে বাড়ি ফেরে। পাড়ার লোকেদের কাছে স্বীকার করে, দাদাকে খুন করে মাটিতে পুঁতে রেখেছে। পাড়ার লোক পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ আসে ওদের কে গ্রেফতার করে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version