কলকাতা ব্যুরো: সারাদিন নাটক এবং চমকের পর সোমবার রাতে অতি নাটকীয় ভাবে নারদ কান্ডে ধৃত চারজনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন সন্ধ্যায় নগর দায়রা আদালতের সিবিআই কোর্ট ওই চার জনের জামিন মঞ্জুর করেছিল। তারপরেই হাইকোর্টে তড়িঘড়ি আবেদন করে সিবিআই। সেখানে একদিকে ওই চার প্রভাবশালী নেতাকে গ্রেপ্তারের পর যেভাবে তাদের অফিস ঘেরাও করে রাখা হয় সেই প্রশ্ন তুলে মামলা কলকাতা থেকে সরানোর আবেদন করা হয়। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের ধৃতদের জামিনের আবেদন খারিজের দরখাস্ত করে সিবিআই। রাত প্রায় দশটা নাগাদ ভার প্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআইয়ের আবেদন গ্রহণ করেন। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের এদিনের নির্দেশে সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। আগামী বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ফলে ওই দিন পর্যন্ত ধৃতদের জেল হেফাজতের থাকতে হবে।
এদিন হাইকোর্টে সিবিআই যে মামলা দায়ের করে তা চণ্ডীগড়ে বসে শুনানিতে অংশ নেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। অন্যদিকে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার বাড়িতে থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই শুনানিতে অংশ নেন। সিবিয়াই আর হয়ে দিল্লি থেকে অংশ নেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা। রাত প্রায় দশটা পর্যন্ত চলে এই শুনানি।এদিন সকালে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই গ্রেপ্তার করে নিজাম প্যালেসে তাদের অফিসে নিয়ে আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সেখানে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরের ছয় ঘণ্টা ধরে তিনি সেই অফিসে বসেই তাকেও গ্রেপ্তারের দাবিতে ধর্না দিতে গিয়ে চাপ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ। বাইরে তখন কয়েক হাজার তৃণমূল সমর্থক আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। একসময় রীতিমতো অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়ে ওঠে সিবিআই অফিস।এদিন সন্ধ্যায় হাইকোর্টে লেখা আবেদনে সিবিআই সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছে। তাতে তাদের বক্তব্য, এই নেতারা এতটাই প্রভাবশালী যে তাদের গ্রেপ্তারের পরে তাদের অফিস কার্যত ঘেরাও হয়ে যায় শাসক দলের নেতাকর্মীদের হাতে। চাপ এতটাই বেশি ছিলো যে তারা অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করতে পারেননি। এমনকি তাদের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন সিবিআই অফিসাররা। এই মামলা আগামী বুধবার ফের শুনবে হাইকোর্ট। তার আগে পর্যন্ত এদিনের নাটকীয় ঘনঘটায় শেষ পর্যন্ত সিবিআইয়ের মুখ বাঁচালো হাইকোর্ট।