কলকাতা ব্যুরো: নতুন সংসার। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে একান্তে কয়েকদিন সময় কাটাতে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন। ডেস্টিনেশন হিসাবে হিমাচলপ্রদেশকেই বেছে নিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার আগরপাড়ার নবদম্পতি। আর তাতেই সব শেষ। সেলফি তুলতে দিয়ে গভীর খাদে পড়ে নববধূর মৃত্যু হয়েছে বলেই দাবি স্বামীর। যদিও রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের দাবিতে সরব মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি সানাইয়ের শব্দে মুখর হয়ে ওঠে আগরপাড়া নর্থ স্টেশন রোড এলাকার জয়িতা দাস এবং দমদম পাইকপাড়ার রাহুল পোদ্দারের বাড়ি। ওইদিনই সাতপাক ঘুরে, সিঁদুরদানের মাধ্যমে সামাজিকভাবে বিয়ে হয় দু’জনের। ১ মার্চ জয়িতা দ্বিরাগমনে আসেন বাপের বাড়িতে। এরপর ৪ মার্চ হিমাচলপ্রদেশে মধুচন্দ্রিমায় যান তাঁরা। বেড়াতে গেলেও পরিবারের সকলের সঙ্গে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল রাহুল এবং জয়িতার।
তবে সুর কাটল শুক্রবার সন্ধেয়। জয়িতার বাবা যাদবচন্দ্র দাস জানান, ওইদিনই তিনি একটি ফোন পান। তিনি কাঁদতে-কাঁদতে বলেন, আমায় ওখানকার ওসি ফোন করে জানালেন যে মেয়ে খাদে পড়ে গিয়েছে। ওইখানে একটি সুইসাইড পয়েন্ট রয়েছে। সেই পয়েন্টের কাছ থেকেই পড়ে মৃত্যু হয়েছে ওর। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে তাঁকে জানানো হয়, কিন্নরে খাদের পাশে গিয়ে ছবি তুলছিলেন জয়িতা। সেই সময় প্রায় ৪০০-৫০০ ফুট নিচে গভীর খাদে পড়ে যান তিনি। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। মৃত্যু হয় নববধূর। আনন্দের মধ্যে বিষাদ গ্রাস করে দু’টি পরিবারকেই। এ খবর পাওয়ামাত্রই শোকে ভেঙে পড়েন জয়িতার পরিজনেরা। শ্বশুরবাড়ির অবস্থাও প্রায় একইরকম।
নববধূর দিদি, জামাইবাবু, শ্বশুর ও ভাসুর কিন্নরের উদ্দেশে পাড়ি দেন। দেহ রাজ্যে ফিরিয়ে আনাই এখন প্রথম লক্ষ্য তাঁদের। স্থানীয় কাউন্সিলর অনুপম দত্ত দেহ ফেরানোর বিষয়ে রাজ্য সরকারের সহযোগিতার আরজি জানান। তবে আদৌ ছবি তুলতে গিয়ে পাহাড়ের খাদে পড়ে মৃত্যু হল জয়িতার নাকি এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য কিছু রয়েছে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। মেয়ের মৃত্যুর যথাযথ তদন্তের দাবিতে সরব জয়িতার পরিবারের লোকজন।