কলকাতা ব্যুরো: আফগান নাগরিকদের দেশে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে হুমকি দিচ্ছে তালিবান। এদিকে কাবুল বিমানবন্দরে হামলা চালালে বন্ধ হয়ে যেতে পারে সম্পূর্ণ উদ্ধারকাজই। আর সেই কারনেই আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তার কথা ভেবেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে নতুন নিয়ম জারি করা হল। এবার থেকে ই-ভিসা রয়েছে, এমন আফগান নাগরিকরাই কেবল ভারতে আসতে পারবেন।

আফগানিস্তান থেকে উদ্ধারকার্য শুরু করার পরই গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছিল, আফগানিস্তানে যে সমস্ত ভারতীয়রা আটকে রয়েছেন, তাদের দেশে ফেরানোর জন্য ফাস্ট ট্রাক ভিসার ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। “ই-এমার্জেন্সি এক্স-মিস্ক ভিসা” নামক  জরুরিভিত্তিতে ভিসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা এই মুহূর্তেই আফগানিস্তান থেকে দেশে ফিরতে চাইছেন, তারা এই ভিসার জন্য় আবেদন জানাতে পারবেন। মন্ত্রকের তরফে দ্রুত ভিসার অনুমোদন দেওয়া হবে, যাতে বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশিদিন তাদের আফগানিস্তানে আটকে থাকতে না হয়।

এদিকে, মঙ্গলবারই তালিবানের মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, কাবুল বিমানবন্দরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিজেদের দেশের উদ্ধারকারী বিমান ধরতে বিদেশীদের বিমানবন্দরে যেতে দেওয়া হলেও আফগানবাসীদের ওই রাস্তা ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না, তাদের বিমানবন্দরে যেতে দেওয়া হবে না।

পাশাপাশি তালিবান মুখপাত্র জানান, যেভাবে অন্য দেশগুলিতে আফগানিস্তানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাতে খুশি নন তারা। যে সমস্ত আফগান নাগরিক বিমানবন্দরে ভিড় জমিয়ে রয়েছেন, তারাও যেন শহরে ফিরে আসেন। তাদের কোনও শাস্তি দেওয়া হবে না। মুজাহিদ বলেন, আমরা আফগান নাগরিকদের অন্য দেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেব না। যেভাবে তাদের অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাতেও আমরা খুশি নই। আফগানিস্তানের চিকিৎসক ও শিক্ষকরা দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না। তাদের নিজেদের কর্মক্ষেত্রেই কাজ চালিয়ে যাওয়া উচিত।

তালিবানের এই ফতেয়ার পরই বুধবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, আফগান নাগরিকদের মধ্যে যাদের কাছে ই-ভিসা রয়েছে, কেবল তারাই ভারতে আসতে পারবেন। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে অনেকে পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানা গিয়েছে। আগে থেকে যারা ভিসার আবেদন করেছেন, যা ভিসার মেয়াদ রয়েছে কিন্তু পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছেন, তাদের আবেদনও বাতিল বলেই গণ্য করা হবে।

ই-ভিসার আবেদনের জন্য ভারত সরকারের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন জানাতে হবে। তবে আফগানিস্তানের বর্তমান যা পরিস্থিতি, তাতে মোবাইলের নেটওয়ার্কও থাকছে না। সেক্ষেত্রে অনলাইনে আবেদন করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য বিষয় হয়েই দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখনও অবধি ভারত সরকারের তরফে ৬২৬ জনকে কাবুল থেকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে বহু আফগান নাগরিকও রয়েছেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version