কলকাতা ব্যুরো: নন্দীগ্রামে শেষ মুহূর্তের যুযুধান দু’পক্ষের বাকযুদ্ধে সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দুপক্ষই একেবারে ধর্মের তাস বাজারে ছেড়ে দিয়েছে। এই অবস্থায় রাত থেকেই নন্দীগ্রাম জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। ফলে নন্দীগ্রামে এবার আর ভোটকে উৎসব বলে ব্যাপারটাকে অযথা হালকা করার সুযোগ নেই। একই সঙ্গে নন্দীগ্রামে ঢোকা ও বেরোনোর সব রাস্তায় নাকা চেকিং শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু নন্দীগ্রামের ভোটার নন, তাই আজ রাত থেকে কাল সারাদিন তাকে থাকতে হবে নন্দীগ্রামের ভাড়া করা বাড়িতে। ফলে বুথে কোন গোলমাল হলেও, একমাত্র নির্বাচন কমিশনের বিশেষ অনুমতি ছাড়া, তিনি সেখানে পৌঁছতে পারবেন না। আর এরই মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে একটি তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ঘুরতে শুরু করেছে। যার থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরো বেশি রণং দেহি হয়ে উঠেছেন কিনা, এখন সেই প্রশ্নই জোরালো হচ্ছে।

তৃণমূল এখন আর শুধু নিজের ভরসায় বা দলনেত্রীর ভরসায় যে ভোটে জেতার চেষ্টা করছে না, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বছর খানেক আগেই। প্রশান্ত কিশোর নামের এক ভোট করিয়েকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, ভোট উৎরানোর। অথচ হঠাৎ সেই প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই প্যাকের নামে একটি সমীক্ষার রিপোর্ট এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী পেতে পারেন ৫২% ভোট আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেতে পারেন ৪২ শতাংশের ওপর ভোট। এমন তথ্য এবং তার সঙ্গে কোন কোন এলাকায় বেশি সেসব গ্রামের নাম দিয়ে সমীক্ষা প্রচার চালানো হয়। বেশ কয়েকদিন ধরেই আই প্যাকের নামে এই প্রচার চলার পর মুখ খুলেছে ওই সংস্থা। আইপ্যাক জানিয়ে দিয়েছে, তাদের নামে এমন মিথ্যা প্রচার করে মনোবল ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে। অর্থাৎ বিজেপি যে এমন নোংরা রাজনীতির খেলা খেলছে সেই অভিযোগ তোলা হয়েছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার তরফে।
নন্দীগ্রামে দুটি ব্লকে ৩০ শতাংশ ভোট রয়েছে সংখ্যালঘুদের। আর ৭০% হিন্দুদের। এই অবস্থায় ধরা হয়েছিল, মমতার পক্ষে ৩০ শতাংশ ভোট যেতে পারে, আর সে ক্ষেত্রে গোটা হিন্দু ভোট টাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবে কিনা, সেই জল্পনাও জোরালো হচ্ছিল। এই অবস্থাতেই মমতার পরামর্শদাতারা আরো বেশি করে তাকে হিন্দুত্বের পক্ষে বলার পরামর্শ দিয়েছেন কিনা এখন সেই প্রশ্ন ঘুরছে। গত কয়েকদিন ধরে মমতার হিন্দুদের সম্পর্কে বেশি শব্দ খরচ করা। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে নতুন তথ্য, মমতার নিজের শান্ডিল্য গোত্র প্রকাশ্যে নিয়ে আসা। ফ
এ যাত্রায় মমতা হিন্দুত্ব নিয়ে বিজেপির পাতা ফাঁদে পা দিলেন কিনা সেই প্রশ্ন কিন্তু উঠে গিয়েছে। যদিও সব কিছুর উত্তর পাওয়া যাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর। কার বৃহস্পতি তুঙ্গে উঠলো, তা বোঝা যাবে, কত শতাংশ ভোট পড়েছে নন্দীগ্রামে, তার উপরেই।