২১ এর ধর্মযুদ্ধ

নন্দী -মা’র তথ্য বিকৃতি, ইতিহাস বদলেও মিলবে নন্দীগ্রাম?

By admin

March 30, 2021

কলকাতা ব্যুরো: বুধবারটা পেরোলেই দেশের সবচেয়ে নজরকাড়া কেন্দ্রের নির্বাচন হতে যাচ্ছে এ বাংলায়। হ্যাঁ, নন্দীগ্রামের কথাই বলছি। মঙ্গলবার বিকেলে ছিল নন্দীগ্রাম সহ দ্বিতীয় পর্যায় যে জায়গাগুলিতে নির্বাচন বৃহস্পতিবার, তার প্রচার এর শেষ দিন। তাই এদিন সবচেয়ে বেশি তারকাদের ভিড় ছিল নন্দীগ্রামকে ঘিরে। অমিত শাহ থেকে বিমান বসু হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিস্কো ড্যান্সার মিঠুন চক্রবর্তীর জনসভা করে রোড শো করে। নন্দীগ্রাম দখল করার জন্য শেষ মুহূর্তে ধামাকা প্রচার চালাল সব দলই।

এই বাজারে শুভেন্দু অধিকারী যেমন তৃণমূলকে মোক্ষম জবাব দিতে বলে বসলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতলে রাজ্য মিনি পাকিস্তান হবে। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে হিন্দু প্রমাণ করতে তার ব্রাহ্মণ্য পদবীর সঙ্গেই নিজের গোত্র চিৎকার করে জানিয়ে দিলেন ভোটারদের। আর এই তরজাতেই শেষ মুহূর্তে আবার জমে উঠলো নন্দীগ্রামের লড়াই।বৃহস্পতিবারের ধর্মযুদ্ধে কার বৃহস্পতি তুঙ্গে থাকবে, মমতা নাকি শুভেন্দু, তা জানা যাবে ২ মে। কিন্তু নন্দীগ্রাম দখল করতে মরিয়া দুপক্ষই গত কয়েকদিনের প্রচারে যেভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ প্রতি আক্রমণ চালালেন, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট, চাপে রয়েছেন দুজনেই। সেই চাপ কার কতটা বেশি তার আঁচ পাওয়া যেতে পারে দুপক্ষের বক্তব্যের নির্যাস থেকে। যেখানে তাই নজিরবিহীন ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর বক্তব্যে। উদ্দেশ্য ছিল, অধিকারী পরিবারকে ভিলেন বানানো। কিন্তু মমতার বক্তব্য অধিকারী পরিবার যতটা না ভিলেন তৈরি হয়েছে, তার থেকে মানুষের মনে নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে তৃণমূলের সততা আরও বড় প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। এরইমধ্যে শুভেন্দু অধিকারী মমতার মুসলিম তোষণ নিয়ে খোটা দিয়েছেন, আর তার শেষ জবাব দিতে গিয়ে মঙ্গলবার মমতার গোত্র জানিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন তিনি আসলে হিন্দু ও ব্রাহ্মণ।

নন্দীগ্রামে কোন দল জিতবে সেটা নিয়ে আলোচনার থেকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক তরজা করতে গিয়ে যেভাবে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ইতিহাসকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে দার করিয়েছেন, সেখানে আরো বড় হয়ে উঠছে মমতার লেখা বইয়ের সত্যতা। তিনি নন্দীগ্রাম নিয়ে লেখা বই ‘নন্দী – মা’ তে যে তথ্য দিয়েছেন, সেখানে শুভেন্দু সেনাপতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আর বর্তমানে ভোট বাজারে তিনি বলেছেন, শুভেন্দু পুলিশ ডেকেছিল সেদিন, অর্থাৎ ২০০৭ এর ১৩ মার্চ। এই দুইয়ের মধ্যে বিশাল তফাৎ হয়ে গিয়েছে। এখন প্রশ্ন, তাহলে কি বিকৃত তথ্য দেওয়ার জন্য মমতার ওই বই ব্যান করা হবে বা বাজার থেকে তুলে নেওয়া হবে? যদিও তা নিয়ে এখনো কোনো রাজনৈতিক দলই মুখ খোলেনি। এখন দেশের চোখ বৃহস্পতিবারের নন্দীগ্রামের দিকে।