কলকাতা ব্যুরো: নিম্নচাপে অতি ভারী বৃষ্টি আর পূর্ণিমার কোটালের জেরে নদী ও সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। আর সেই কারনেই ফের বাঁধ ভাঙলো সুন্দরবন উপকূলে ৷ এর আগে ইয়াসের প্রভাবে এমনিতেই ভগ্নপ্রায় হয়ে গিয়েছিল সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে থাকা বাঁধগুলি। যদিও পরে ধাপে ধাপে সেই সমস্ত বেহাল বাঁধগুলো মেরামত করা হয়। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টি, একের পর এক কোটাল, নিম্নচাপের জেরে বাঁধের মাটি ক্ষয় হতে থাকে। ফলে সাগরদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, মৌসুনি ও ঘোড়ামারা দ্বীপের বেহাল নদী ও সমুদ্র বাঁধগুলোর উপর কড়া নজর রেখেছে জেলা প্রশাসন।

কয়েদিনের টানা বৃষ্টিতে বঙ্গোপসাগরে ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়। জলমগ্ন হয়ে পড়ে মৌসুনি দ্বীপের বালিয়াড়া, সল্টঘেরি ও পয়লা ঘেরির একাংশ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূল এলাকার পঞ্চায়েত, ব্লক প্রশাসন ও সেচ দফতরকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে রায়দিঘির পাড় এলাকায় ভেঙে পড়ে বেশ কয়েকটি কাঁচা বাড়ি। এছাড়াও সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই খবর এসেছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে ত্রিপল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের উপকূল এলাকা থেকে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে ৬৮ টি ত্রাণশিবিরে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এমনকি ৭২ টি জায়গায় রান্নার ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন। দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ৩৫০ জন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীকে বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন রাখা হয়েছে। উপকূল এলাকায় নজরদারি ও দ্রুত উদ্ধার কাজের জন্য ১৫টি নৌকাকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একটানা বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। তবে এই দুর্যোগে সুন্দরবনবাসী দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে কি না, তা সঠিক জানায়নি আবহাওয়া অফিস।

বুধবার নামখানা ব্লকের বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর জানান, মৌসুনী দ্বীপ-সহ নামখানা ব্লকের বেশ কিছু জায়গা জলমগ্ন এবং জলোচ্ছ্বাসের কারণে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ আগামী দিনে ষাঁড়াষাঁড়ি বাণের আর বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে বহু মানুষকে ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ তিনি আশ্বস্ত একটি বিশেষ দল সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বাঁধ মেরামতির কাজে হাত লাগিয়েছে ৷ আর এক-দু’দিনের মধ্যে বৃষ্টি কমে গেলে পুরোদমে কাজ শুরু করা যাবে ৷

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version