কলকাতা ব্যুরো: সোমবার মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে পাঁচজনের সলিল সমাধিতে শোকের ছায়া গোটা এলাকায়। মৃতদের মধ্যে একই পরিবারের তিনজন রয়েছেন। অন্য দুজন ওই এলাকারই বাসিন্দা। সামান্য জল থাকা বিলে যে ওইভাবে পাঁচজন মারা যেতে পারে তাই এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না স্থানীয়রা।

প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই বলছেন, নৌকো তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা দেখেও আমরা ভাবি নি একবারও দুর্ঘটনা তার থেকে ঘটতে পারে কারণ সেখানে মানুষ ডুবে যাওয়ার মত জলই প্রায় ছিলনা। তাই যখন নৌকো ওই ভাবে বসে যাচ্ছে, তখনো পাড়ে দাঁড়িয়ে অনেকেই মজা ভেবে হাসাহাসি করছিল। কোনভাবেই যে পুলিশের কোনো ব্যবস্থা ছিল না ওই পুকুরে ভাসানের ক্ষেত্রে তা জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। যদিও পুলিশ আগেই জানিয়েছে, ওই পরিবার বিসর্জন দেওয়ার জন্য তাদের থেকে আগাম কোনরকম অনুমতি নেয়নি।

দুটি নৌকো করে হাজরা বাড়ীর ঠাকুর বিসর্জন দিতে দল বেঁধে সকলে গিয়েছিলেন ওই বিলের ঘাটে। একটি নৌকায় বাসিন্দাদের সঙ্গে ছিল দুর্গার এক চালার মূর্তি। অন্য নৌকায় ছিলেন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী। বিলে গিয়ে নৌকা থেকে ঠাকুর যখন জলে ভাসানোর তদারক করা হচ্ছে, তখনই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। অথচ তখনও জোরে বেজে চলেছে বক্সে ডিজের গান। বাজছে ঢাক।

চারিদিকে দর্শকদের চিৎকার। ফাটছে বাজি। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই, ঠাকুর সহ নৌকোর একটি দিক আস্তে আস্তে বসে যায় জলের মধ্যে। সেই নৌকো থেকে সকলেই পরে যান বিলে। এরই মধ্যে কয়েকজন সাঁতরে পাড়ে উঠে পড়েন। কয়েকজন আবার খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন অন্যদের। কিন্তু সকলের চোখের সামনে ঘটনা ঘটলেও, কেউই বুঝে উঠতে পারেননি যে তাদেরই পাঁচজনের সলিল সমাধি হয়ে গেল ওই বিলের মধ্যে।

স্থানীয়রা বলছেন, বিলটিতে জল খুব বেশি ছিল না। কিন্তু যারা ডুবে গেছেন তারা সাঁতার জানতেন না। আবার পুকুরের মাঝে গভীর পাকের মধ্যে আটকে গিয়ে তারা আর জলের উপরে উঠতে পারেননি- এমনটাও হতে পারে। শেষপর্যন্ত রাতে তল্লাশি চালিয়ে পাঁচ জনে দেহ উদ্ধার করা হয়। সেই নির্মম ছবি দেখে নিন, কেমন ভাবে সকলের চোখের সামনে নৌকো ডুবে গিয়ে এত বড় একটি ঘটনা ঘটে গেল।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version