কলকাতা ব্যুরো: জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar) এনডিএ শিবিরের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হয়েছেন। সংসদের হিসাব যা বলছে, তাতে ধনকড়ের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া কার্যত নিশ্চিত। শুধু বিজেপির একার শক্তিতেই ধনকড় জিতবেন। সেই সঙ্গে জোট সঙ্গীদের সমর্থন তাঁর জয়ের ব্যবধান আরও বাড়াবে। ইতিমধ্যেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিয়েছেন। তাছাড়া বিরোধী শিবির ধনকড়ের বিরুদ্ধে আদৌ প্রার্থী দেবে কিনা, সেটাও নিশ্চিত নয়। সব মিলিয়ে ধনকড়ের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া কার্যত নিশ্চিত।
কিন্তু ধনকড় উপরাষ্ট্রপতি হওয়া মানে রাজ্যের রাজ্যপাল (Governor) পদে শূন্যস্থান তৈরি হওয়া। বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন ধনকড় যতই শাসকদলের চক্ষুশূল হয়ে উঠুন না কেন, বিরোধীদের কাছে তিনি ভরসার জায়গা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন। বিশেষ করে বিজেপি নেতাদের কাছে তিনি আশ্রয় হিসাবে উঠে এসেছিলেন। পান থেকে চুন খসলেই সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা সোজা চেলে যান রাজভবনে।
তাছাড়া প্রতিনিয়ত টুইট করে রাজ্য সরকারের সমালোচনা, রাজ্যকে বেকায়দায় ফেলতে বিলে সই না করা, এসব ধনকড়ের ইউএসপি ছিল। বিজেপিকে এবার ধনকড়ের ‘যোগ্য উত্তরসূরি’ খুঁজতে হবে। এক্ষেত্রে যার নাম সর্বাগ্রে ভেসে আসছে তিনি হলেন সদ্য প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়নমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি (Mukhtar Abbas Naqvi)। বাংলার ভোটারদের একটা বড় অংশ সংখ্যালঘু।
এরাজ্যে ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে এটাই বিজেপির কাছে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হিসাবে দেখা দিচ্ছে। তাই নিজেদের সংখ্যালঘু মুখকে বাংলার রাজ্যপাল করে দিয়ে বিজেপি এরাজ্যের সংখ্যালঘুদের ইতিবাচক বার্তা দিতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। নকভি (Mukhtar Abbas Naqvi) ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এই মুহূর্তে তিনি সাংসদও নন।
শোনা যাচ্ছিল, এনডিএ শিবির তাঁকেই উপরাষ্ট্রপতি পদে বেছে নিতে পারে। কিন্তু সেটা যখন হল না, তখন ‘পুনর্বাসনে’র জন্য তাঁকে বাংলার রাজ্যপাল (Governor) করা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। এর আগেও বেশি মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্যগুলিতে সংখ্যালঘু মুখকে রাজ্যপাল করার নজির রয়েছে বিজেপির অন্দরে। এর আগে নাজমা হেপাতুল্লা, আরিফ মহম্মদ খানরা বিজেপির আমলেই রাজ্যপাল হয়েছেন। এখনও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কেরলের রাজ্যপাল পদে রয়েছেন আরিফ মহম্মদ খান। সেই পথ ধরে বাংলাতেও পাঠানো হতে পারে নকভিকে।
তবে, বিজেপি নেতৃত্বের নজরে আরও কয়েকটি নাম রয়েছে বলেই সূত্রের খবর। সবদিক বিবেক বিবেচনা করেই বাংলার রাজ্যপাল (Governor) বেছে নেওয়া হবে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মোদি-শাহ জুটিই।