কলকাতা ব্যুরো: ভর সন্ধেবেলা কলকাতার জমজমাট এলাকা ভবানীপুরের ফ্ল্যাটে দম্পতি খুনের ঘটনায় রহস্য আরও বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত অধরা দুষ্কৃতীরা। সিসিটিভি ফুটেজে ২ জনকে অস্পষ্ট দেখা গেলেও তারাই আসল খুনি নাকি অন্য কেউ খুন করে পালিয়েছে, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে তদন্তকারীরা। এই দুই সন্দেহভাজনের পাশাপাশি পুলিশের স্ক্যানারে বাড়ির পরিচারিকা, ঠিকাদাররাও। মঙ্গলবার সকালে তাঁদের জেরা করেছে ভবানীপুর থানার পুলিশ। ঘটনার সময় তাঁরা কে কোথায় ছিলেন তা জানতে চান তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, দম্পতি ২ টি মোবাইল ফোন পাওয়া যাচ্ছে না। তার খোঁজও চলছে। পুলিশ সূত্রে খবর মহিলাকে মাথায় গুলি করে ও স্বামীকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধেবেলা হরিশ মুখার্জি স্ট্রিটের একটি আবাসন থেকে উদ্ধার হয় গুজরাটি দম্পতির মৃতদেহ। মৃতরা বছর ষাটের অশোক শাহ ও ৫৫ বছরের রশ্মিতা শাহ। দুটি ঘরে দু’জনের দেহ পড়ে ছিল। শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এত নৃশংস ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান পুলিশ কমিশনার, জয়েন্ট সিপি-সহ উচ্চপদস্থ কর্তারা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পৌঁছন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, স্থানীয় কাউন্সিলর কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। রাতেই পুলিশ কুকুর নিয়ে বাড়ি ও এলাকায় তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, খুন করা হয়েছে ওই দম্পতিকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির ঘরের আলমারির দরজা খোলা ছিল। ফলে লুঠের উদ্দেশ্যে এসে দম্পতিকে খুনের তত্ত্বও ওড়াতে পারছেন না তদন্তকারীরা। ঘটনার পিছনে পরিচিত কেউ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘরের ভিতর তল্লাশি চালিয়ে তদন্তকারীরা একটি বিষয় প্রায় নিশ্চিত যে পরিচিত কেউ ফ্ল্যাটের বেল বাজিয়েছিলেন। তাই কোনও সন্দেহ না করেই দরজা খুলে দিয়েছিলেন রশ্মিতাদেবী। আর তখনই বিপদ ঘনিয়ে আসে।
তবে রহস্য আরও বাড়িয়েছে দম্পতির উধাও হয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন। তা হাতে থাকলে কললিস্ট পরীক্ষা করে তাঁরা কখন কার সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তা জানা যেত, তদন্তে যা বেশ খানিকটা সাহায্য করতে পারত বলেই মনে করছে পুলিশ। এই মুহূর্তে নিখোঁজ মোবাইল তাই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে কিছুটা অন্তরায় হচ্ছে। এদিকে, সিসিটিভি ফুটেজে সন্দেহভাজনদের গতিবিধি যতদূর চোখে পড়ছে, তা থেকে তদন্তকারীরা বোঝার চেষ্টা করছেন, এরাই আসল খুনি কিনা।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সোমবারই হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দোষীদের দ্রুত খুঁজে কঠোর শাস্তি দেওয়ার কথা বলেছেন।