এক নজরে

চিত্তরঞ্জন থেকে মুখ ফেরাচ্ছে পরিযায়ী পাখিরা

By admin

February 16, 2021

প্রতিবেদন ও ছবি –গৌর শর্মা

শীতের মরসুমে সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে রেলের শহর চিত্তরঞ্জনে এসে ওরা হতাশ। শহরের জলাশয়গুলিতে মানুষের দখলদারী দিনকে দিন বেড়ে যাওয়ায় এই শহরে আজ তারা প্রায় ব্রাত্য। শহরের মূল জলাশয় ছেড়ে আশেপাশে জলাশয় গুলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এবারের মতো ঠাঁই করে নিয়েছে ওরা। শীত না কমলে দলছুট হয়ে দেশে ফেরার উপায় নেই যে কোন।

প্রতি বছর শীতের মরসুমে দলে দলে স্থলজ ও জলজ পরিযায়ী পাখি ভিড় জমায় রেলের শহর চিত্তরঞ্জনে। লেসার হুইসিলিং ডাক,লিটিল গ্রিব, নর্দান পেন্টাল, পার্পেল হেরন, রেড ক্রিস্টেড পোচার্ড, রুড্ডি সেল্ড ডাক, টাফটেড ডাক, গ্রে লেগ গুস আরো কত নাম না জানা পাখির কলতানে মূখরিত হতো এই রেলের শহর চিত্তরঞ্জন।পক্ষী প্রেমী ও পক্ষী পর্যবেক্ষণ আলোকচিত্রীরা ভিড় জমাতেন চিত্তরঞ্জনের জলাশয়গুলির আশেপাশে । প্রবীন আলোকচিত্রী পুলক দাস জানান-দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে চিত্তরঞ্জনের জলাশয় গুলিতে আমরা পাখির ছবি তুলতে যাই। তবে বছর চারেক ধরে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমছে ।

গত ১৯ জানুয়ারী চিত্তরঞ্জনের জলাশয় গুলিতে পাখিদের আদমসুমারিতে জলজ স্থায়ী ও পরিযায়ী মিলিয়ে ৩৭টি প্রজাতির পাখির উপস্থিতি মেলে। স্থলজ স্থায়ী ও পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে ৭৯টি প্রজাতির । আশ্চর্য্য জনক ভাবে আনুপস্থিত টাফটেড ডাক ও গ্রে লেগ গুস এবারের পাখি আদমসুমারিতে। প্রতি বছর পাখিদের উপস্থিতির হার ক্রমশ কমে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন পাখি পর্যবেক্ষনকারী ও পরিবেশবিদরা।এবারের পাখি আদমসুমারিতে অংশ নেওয়া পাখি পর্যবেক্ষনকারী অজয় কুমার দাঁ জানান-বছর কয়েক ধরে চিত্তরঞ্জনের মূল জলাশয় কর্ণেল সিংয়ে সি,এল,ডাবলিউ কর্তৃপক্ষ মাছ চাষের লিজ দেওয়ায় পাখিদের বসবাসের অনুকুল পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে । মাছ চাষের জন্য কচুরিপনা সাফাই,জলে রাসায়নিক প্রয়োগ ও সর্বোপরি মাছ ধরার জালে বিঘ্নিত পাখিদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিট অফিসার সুমন্ত দাস জানান –সমস্ত ব্যাপারটি বন দপ্তরের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে । দেখা যাক কি হয়।

চিত্তরঞ্জন দীর্ঘ কয়েক দশকের শীতকালীন আবাসস্থল পরিযায়ী পাখিদের।সি,এল,ডাবলিউ কর্তৃপক্ষ জলাশয় মাছ চাষে লিজ দেওয়ায় বিঘ্নিত হচ্ছে পরিযায়ী পাখিদের অস্থায়ী বসবাসের অনুকুল পরিবেশ । তাই রেলের শহর চিত্তরঞ্জনে পাখিদের আসা –না আসা নির্ভর করছে সি,এল,ডাবলিউর ইচ্ছা-অনিচছার উপর।কারণ একমাত্র সি,এল,ডাবলিউ কর্তৃপক্ষই পারে পাখিদের এই সমস্যার সমাধান করতে । তারাই পারে আগামী বছর অভিমানী পরিযায়ীদের ফিরিয়ে আনতে।