কলকাতা ব্যুরো: করোনা সংক্রমণ বাড়তেই ফের চিন্তার ভাঁজ। কলকাতায় ক্রমেই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে ফের কলকাতায় বাড়ল মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা। এবার, ২৯ থেকে একধাক্কায় ৪৪ টি মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন নতুন করে ঘোষণা করলো কলকাতা পুরসভা।
প্রায় সপ্তাহখানেক আগেই কনটেইনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা কমানো হয়েছিল। ফের বাড়িয়ে দেওয়া হল মাইক্রোকনটেইনমেন্ট জোন। নতুন মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জ়োনের তালিকায় রয়েছে একাধিক বরো। ৪ নম্বর বরোয় ৪ টি, ৭ নম্বর বরোতে ৪ টি, ৯ নম্বর বরোতে ২ টি, ১০ নম্বর বরোতে ১০ টি, ১২ নম্বর বরোয় ১১ টি, ১৪ নম্বর বরোয় ৩ টি, ১৬ নম্বর বরোতে ৫ টি, ৮ নম্বর বরোতে ১ টি এবং ৩ নম্বর বরোতে ৪ টি স্থান মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জ়োন বলে চিহ্নিত হয়েছে। সেই তালিকার মধ্যে রয়েছে, একাধিক বহুতল আবাসনও।

আরবানা, ডায়মন্ড সিটি, রুচিরা, অভিদীপ্তার মতো একাধিক বহুতল আবাসনেও মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও, একাধিক ছোট ছোট রাস্তাও মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জ়োনের তালিকায় রয়েছে। গড়ফা, হরিদেবপুর, পূর্ব যাদবপুর, কসবা, আনন্দপুর, মাদুরাহ, ফুলবাগান, হেয়ার স্ট্রিট, ভবানীপুর-সহ একাধিক এলাকা। ভবানীপুরে, ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বাড়িকে মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন বলে ঘোষিত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিকর্তারা বলছেন, আবাসনগুলিতেই সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ হচ্ছে। এই মুহূর্তে আবাসনগুলিই উৎকন্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের। এরই মধ্যে নবান্নে একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। আবাসনগুলিতে সংক্রমণ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। নিউটাউনের আবাসনগুলির ক্ষেত্রে ফোরাম ও কমিটিগুলিকে নিয়ে একটি বৈঠক করার কথা ভাবা হচ্ছে। করোনার স্বাস্থ্যবিধি যাতে তাঁরা মেনে চলেন, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হবে তাঁদের।

সূত্রের খবর, নবান্নের চিন্তা কোনও বস্তি এলাকা নয়। বরং, নবান্নের চিন্তার কারণ বড় বড় আবাসনগুলি কারণ সেখানে অনেক ক্ষেত্রেই গিয়ে দেখা গিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না আবাসিকরা। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য, সংক্রমণটা হাই রাইজ়ে বেশি হচ্ছে। আর সেটা লিফটের ব্যবহারের ক্ষেত্রেই বেশি হচ্ছে। লিফটের সুইচ বেশি ধরছেন আবাসিকরা। আর লিফট বন্ধ থাকায়, বাতাসও খেলছে না। ফলে আমরা পরামর্শ দিয়েছিলাম, যাতে স্প্রে করা হয়।

মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জ়োনের তালিকায় ছিল উত্তর কলকাতার একাধিক এলাকা। শ্যামপুকুর ফুলবাগান, মানিকতলা, বৌবাজার, প্রগতি ময়দান-সহ একাধিক এলাকা। এছাড়াও ছিল, গড়িয়াহাট, রিজেন্ট পার্ক, শেক্সপিয়র সরণি, বালিগঞ্জ, ভবানীপুর, গড়িয়াহাট, টালিগঞ্জ-সহ একাধিক এলাকা। কলকাতা পুরনিগমের কনটেনমেন্ট ২৫ টি জ়োনের মধ্যে বস্তি এলাকা ছিল চারটি আর বহুতল ছিল নয়টি। এছাড়াও পাঁচটি, পাঁচটি মিক্সড এরিয়া এবং চারটি হস্টেলও ছিল।

সার্বিক ভাবে করোনায় দৈনিক মৃত্যু বেড়েছে রাজ্যে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। দৈনিক সংক্রমণ ২২ হাজার ৬৪৫। শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ৮ হাজার ৬৮৭ জন। শতাংশর নিরিখে ৯১.১২। পজিটিভিটি রেট ৩১.১৪ শতাংশ। গত একদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭২ হাজার ৭২৫।