এক নজরে

মণীশ খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র নিয়ে কাউন্টার বিজেপি তৃণমূলের

By admin

October 05, 2020

কলকাতা ব্যুরো: টিটাগড় থানার সামনে তাকে খুনের প্রায় ২৪ ঘণ্টার মাথায় সোমবার রাতে মণীশ শুক্লার নিথর দেহ পৌঁছলো বাড়িতে। এদিন সন্ধ্যায় এনআরএস হাসপাতালে তার দেহের ময়নাতদন্তের পর বিজেপির সমর্থকদের বিশাল র‍্যালি করে তার দেহ নিয়ে পৌছন বাড়িতে। রাতেই দেহ সৎকার করা হবে। এর আগে রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ তাকে টিটাগড় পার্টি অফিসের সামনে পরপর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় দুষ্কৃতীরা। তারপর থেকেই মণীশ শুক্লা খুনে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। তাকে স্টেনগান থেকে গুলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি সাংসদ। এমনকি বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এর অভিযোগ, পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেই মণীশ শুক্লাকে খুন করা হয়েছে।

আবার এদিন তৃণমূল নেতা তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম সেই আগ্নেয়াস্ত্র প্রসঙ্গ টেনেছেন মণীশ শুক্লার মৃত্যু নিয়ে তার বক্তব্য জানাতে গিয়ে। এদিন ফিরহাদ বলেছেন, অর্জুন সিং এর লোকসভা ভোটে লড়ার সময় বাইরে থেকে কিছু শার্প শুটার নিয়ে আসা হয়েছিল বলে আমরা শুনেছিলাম। এখানেও মণীশ শুক্লাকে যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছুঁড়ে খুন করা হয়েছে, তা সাধারণভাবে এখানকার দুষ্কৃতীরা ব্যবহার করে না। তাই বাইরে থেকেই এমন অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে অভ্যস্ত দুষ্কৃতীদের আনা হয়েছিল কিনা, সেই প্রশ্ন তুলে উল্টে অর্জুনের দিকেই সন্দেহের তীর ঘোরানোর ফিরহাদ চেষ্টা করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পাশাপাশি মণীশ শুক্লার মৃত্যুর পর যেভাবে তার বিরুদ্ধে থাকা ফৌজদারি মামলার লিস্ট টেনে বের করা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে নাগরিকদের মনে। যখন এই ব্যক্তি তৃণমূলে ছিলেন, তখন কেন এই প্রশ্ন তোলা হয়নি।

মনীশ শুক্লার খুনে এদিন ১২ ঘণ্টা বন্ধ চলে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। সেখানে দফায় দফায় জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ হয়। বিকেলে এনআরএস হাসপাতালে মর্গে তার ময়নাতদন্তের পর দেহ নিয়ে সর্মথকরা বেরুনোর পরেই, পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ করে দেওয়া হয় মধ্য কলকাতা। পুলিশের একাংশের আশঙ্কা ছিল, কোনভাবে দেহ নিয়ে যাওয়া হতে পারে রাজভবনের দিকে। সে কারণেই এস এন ব্যানার্জি রোড ধরে ধর্মতলায় কয়েক হাজার পুলিশকে নামিয়ে দেওয়া হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত দেহ নিয়ে সমর্থক এবং বিজেপি নেতারা পাড়ি দেন খারদাহে তার বাড়ির দিকে। পাশাপাশি কৈলাস বিজয়বর্গীয় সহ বিজেপির একটি দল শুক্লার বাবাকে নিয়ে যান রাজভবনে। সেখানে মনীশের বাবা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকারকে বলেন, পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে তার ছেলেকে। এমনকি পুলিশ খুনের অভিযোগ পর্যন্ত নিতে চাইছিল না বলে অভিযোগ করেন তিনি। রাজ্যপাল সব রকম ভাবে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি বিজেপি নেতাদের।

এদিন সিআইডি তদন্তভার হাতে নেওয়ার পরে এলাকার ছবি তোলে। যদিও টিটাগড়ে যে জায়গায় তাকে খুন করা হয়েছে, সেখানে বেশ কয়েকটি দোকানের সিসিটিভি কয়েকদিন আগেই খারাপ বলে নামিয়ে নেওয়া হয়েছে জানার পর সন্দেহের বাতাবরণ আরো বেড়েছে। এখন রাস্তায় পুলিশের সিসিটিভি দেখেই সিআইডি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে।