কলকাতা ব্যুরো: শনিবার সকালেই স্ত্রী’র সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ‘কোয়ার্টারে ফিরে ফোন করব।’ কিন্তু আর ফোন এল না ৪৬ অসম রাইফেলসের জওয়ান শ্যামল দাসের। মণিপুরের চূড়াচন্দ্রপুরে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের কীর্তিপুরের গ্রামের বাসিন্দার।

সেই খবর গ্রামের পৌঁছাতেই বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন স্ত্রী সুপর্ণা। কেঁদে যাচ্ছেন একটানা। বারবার বলে যাচ্ছেন, ‘আমায় আর কেউ ফোন করবে না।’ অথচ সকালেই স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল।

আট বছরের মেয়ে দিয়া বুঝতে পারছে বাবা আর ফিরবে না। ফুঁপিয়ে-ফুঁপিয়ে সেও কেঁদে উঠছে। তারইমধ্যে মা এবং ঠাকুমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাতেও থামছে না কান্না। শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো গ্রাম।

২০০৯ সালের নভেম্বরে অসম রাইফেলসে যোগ দিয়েছিলেন শ্যামল দাস। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন। দুর্গাপুজোর আগে গ্রামে ফিরেছিলেন। আবার পঞ্চমীতে ফিরে গিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, নবান্নের জন্য আসবেন। কিন্তু কথা রাখতে পারলেন না তিনি। সূত্রের খবর, কলকাতা বিমানবন্দরে মরদেহ নিয়ে আসা হবে। সেখান থেকে সড়কপথে খড়গ্রামের কীর্তিপুরে আনা হবে দেহ। গ্রামেই পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

শনিবার মায়ানমার সীমান্তের কাছে চূড়াচন্দ্রপুর জেলায় ৪৬ অসম রাইফেলসের কনভয়ে হামলা চালানো হয়। সেই হামলায় মৃত্যু হয় ৪৬ অসম রাইফেলসের কমান্ডিং অফিসার কর্নেল বিপ্লব ত্রিপাঠীর। মারা গিয়েছেন শ্যামল দাস-সহ চার জওয়ান। মৃত্যু হয় কর্নেল ত্রিপাঠীর স্ত্রী এবং ছেলেরও।

ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং টুইটারে বলেন, ‘মণিপুরের চূড়াচন্দ্রপুরে অসম রাইফেলসের কনভয়ের উপর কাপুরুষোচিত হামলা অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং নিন্দনীয়। ৪৬ অসম রাইফেলসের কমান্ডিং অফিসার-সহ পাঁচজন বীর জওয়ান এবং কমান্ডিং অফিসারের পরিবারের দুই সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version