এক নজরে

যশে’র ভ্রূকুটিতে রাজ্যে মমতা সর্তকতা

By admin

May 19, 2021

কলকাতা ব্যুরো: আরব সাগরে তাউতের আক্রমণে ছন্নছাড়া গুজরাট, মহারাষ্ট্র, রাজস্থানের বিস্তীর্ণ এলাকা। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে নতুন করে নিম্নচাপ ঘনীভূত হওয়ার লক্ষণ দেখছে আবহাওয়া দপ্তর। যশ নামে এই নিম্নচাপ ঘনীভূত হলে সে ক্ষেত্রে ২৫ মে থেকে 26 মে-র মধ্যে উড়িষ্যা, এ রাজ্য, মায়ানমার এবং বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়বে বলে আবহাওয়া দপ্তরের সূত্রে জানানো হয়েছে। যদিও নিম্নচাপ রেখাটি এখনো সেভাবে প্রভাব বিস্তার করে নি। এখনো তার যা গতিপ্রকৃতি সে ক্ষেত্রে ২২ মে-র পরে নিম্নচাপ রেখাটি ফুলে-ফেঁপে উঠতে পারে। তাহলে ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসতে পারে উপকূলের দিকে। এর ফলে এ রাজ্যের দীঘা- শঙ্করপুর এবং উড়িষ্যার উপকূলবর্তী এলাকায় ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার নদী সংলগ্ন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।গত বছর এই সময় আম্পানের ঝঞ্ঝার পর এবার ঘূর্ণিঝড় যশের আতঙ্কে এদিন নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। মুখ্যমন্ত্রী বাড়ি থেকে ফোনে বৈঠকে নির্দেশ দেন। সেখানে মূলত দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং কলকাতায় দুর্যোগ মোকাবিলায় বাড়তি সতর্কতার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেচ দপ্তর সহ জরুরী পরিষেবা দপ্তরগুলোর কর্মী অফিসারদের ২৫ ও ২৬ মে জরুরী ভিত্তিতে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুরসভার ক্ষেত্রেও বিদ্যুৎ, জল, নিকাশি সহ জরুরী পরিষেবায় যুক্ত কর্মী ও অফিসারদের সতর্ক করা হয়েছে।

একইসঙ্গে এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক এর নেতৃত্বে বিডিও দের ভার্চুয়াল বৈঠকে জেলার বঙ্গোপসাগর এবং নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে এখন থেকেই নজরদারী বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় যেসব শেল্টার করে রাখা ছিল, সেগুলি দ্রুত নজরদারি করে শৌচাগার এবং আলোর ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেসব বন্ধ স্কুলে করোনার জন্য হোম আইসোলেশন এর ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেগুলি তে মানুষ যাতে গেলে থাকতে পারে, সে ব্যাপারে নজর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার ব্যাপারে এখন থেকেই সর্তকতা জারি করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এই নিম্নচাপের উপর বর্ষার আগমনও অনেকটা নির্ভর করতে পারে। সাধারণভাবে ১ জুন নাগাদ বর্ষা ঢোকে কেরলে। আন্দামানে ঢোকে ২২ মে। এ বার আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, ৩১ মে নাগাদ কেরলে বর্ষা ঢুকে পড়তে পারে। আন্দামানে বর্ষা এবার ঢোকার মুখে। আবহবিদরা মনে করছেন, নিম্নচাপ শক্তিশালী হলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বাতাসের জোর বাড়বে। ফলে নির্ধারিত সময়ের অনেকটা আগেই কেরলে বর্ষার আগমন হয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই তাউটের প্রভাবে কেরল, কর্নাটক, গোয়া, মহারাষ্ট্র, গুজরাটে বর্ষার সমন বৃষ্টি হয়েছে। রাজস্থানেও প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে টাউটের জেরে। অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টি হলে সেই জল কোনও কাজে লাগে না। উল্টে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়। বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড়ের শক্তিশালী হওয়ার প্রবণতাও বাড়ছে। তাউটেকে ধরে গত পাঁচ বছরে ২৪টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টিই তীব্র বা তার চেয়েও বেশি শক্তিশালী। আর বঙ্গোপসাগর উপকূলে বছরে বছর মে মাসে ঘুরেফিরে নিম্নচাপের জেরে তৈরি হওয়া সাইক্লোনে ক্ষয়ক্ষতি হয়ে চলেছে।