কলকাতা ব্যুরো: রাতের অন্ধকারের পুড়িয়ে ১০ জনকে খুনের মতো নৃশংস ঘটনা। রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে গোড়া থেকেই প্রশ্ন উঠছিল। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই পুলিশকে কার্যত কাঠগড়ায় তুললেন। সেইসঙ্গে দলের নেতাকেও সরাসরি গ্রেপ্তারির নির্দেশ দিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বগটুই গ্রামে নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে দোষীদের কড়া শাস্তি দিতে হবে বলে পুলিশকে কড়া নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্পষ্ট বললেন, এস়ডিপিও, আইসি, ডিআইজি – পুলিশকে ঠিকমতো কাজে লাগায়নি যারা, তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। তৃণমূলের ব্লক প্রেসিডেন্ট আনারুল হোসেনের নাম করে বললেন – আনারুলকে গ্রেপ্তার করতে হবে। তাঁর কথায়, যেখানেই যে পালাক, ধরে আনতে হবে।
সোমবার রাতেই খুন হয়েছেন রামপুরহাটের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ। চায়ের দোকানে তাঁকে বোমা মেরে খুনের অভিযোগ ওঠে। তারপর রাতের আঁধারেই বগটুই গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়, পুড়ে মৃত্যু হয় গ্রামবাসীদের। তাতে কার্যত বাংলায় আগুন জ্বলে ওঠে। এত বড় ঘটনা রুখতে পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়।
ঘটনার ৩ দিন পর, বৃহস্পতিবার বগটুই গ্রামে গিয়ে সেই ব্যর্থতার জন্য পুলিশকে কাঠগড়ায় তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, আগের রাতেই খুন হয়েছে গ্রামে। পুলিশের উচিত ছিল আরও সজাগ থাকা, নিরাপত্তার বাড়তি ব্যবস্থা করা। কিন্তু আইসি বা এসডিপিও পুলিশকে ঠিকমতো কাজে লাগায়নি। তার জন্য এমন ঘটনা ঘটে গেল। আমি ভাবতেই পারছি না, এত ভয়াবহ ঘটনা।
এরপরই তিনি রাজ্যের ডিজিপি মনোজ মালব্যকে ডেকে নির্দেশ দেন, সকলকে কড়া শাস্তি দিতে হবে। পুলিশ প্রশাসনের যাদের গাফিলতি রয়েছে, সকলকেই শাস্তির মুখে পড়তে হবে। স্থানীয় তৃণমূলের ব্লক প্রেসিডেন্ট আনারুল হোসেনের কথা উল্লেখ করে বিশেষভাবে বলেন, আনারুলকে গ্রেপ্তার করতে হবে। এছাড়া এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এখন বগটুই গ্রামে পুলিশ পিকেট থাকবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখনও গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ। মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে গ্রামবাসীর তাঁকে ঘিরে ধরে নিজেদের দুর্বিসহ অভিজ্ঞতার কথা জানান। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দেন।