কলকাতা ব্যুরো: ডিজি বা মুখ্যসচিবকে বারবার তলব করেও সাড়া মেলেনি। এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজভবনে ডেকে পাঠালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। চলতি সপ্তাহের যে কোনও দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজভবনে উপস্থিত হতে অনুরোধ করে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। সেই চিঠির প্রতিলিপি আবার টুইটও করেছেন তিনি।
টুইটে রাজ্যপালের বক্তব্য, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চান। কারণ, আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যা সমাধান হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে রাজ্যপাল প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়ে রেখেছেন। ধনকড়ের বক্তব্য, সম্প্রতি বেশ কিছু বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে তথ্য চেয়েও পাইনি। এইসব তথ্য না পেলে রাজ্যে সাংবিধানিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। যেটা এড়িয়ে চলা আমাদের দুজনেরই সাংবিধানিক কর্তব্য। আপনার তরফ থেকে দীর্ঘদিন কোনও জবাব না পাওয়ায় আমার সব আলোচনার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তাই আপনার কাছে আমার অনুরোধ চলতি সপ্তাহের যে কোনও দিন রাজভবনে এসে আমার সঙ্গে আলোচনায় বসুন।
মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে পাঠানো নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, তাঁকে পাঠানো চিঠি প্রকাশ্যে আনায় রাজ্যপালকে পালটা তোপ দেগেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলছেন, রাজ্যপাল একটি সাংবিধানিক পদ। মুখ্যমন্ত্রীও সাংবিধানিক পদ। জগদীপ ধনকড় নামের ব্যক্তিটি সাংবিধানিক পদটির মর্যাদা ধুলোয় লুটিয়ে দিয়েছেন। রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতেই পারেন, ডেকেও পাঠাতে পারেন। কিন্তু সেটা প্রকাশ্যে টুইট করাটা অসভ্যতা। চিঠি পাঠাতেই পারেন, কিন্তু টুইট কেন করলেন? উনি কী বলতে চাইছেন উনি জমিদার? সবই তো টুইট করেন, তাহলে চিঠি দেওয়ার কী আছে। একজন রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠি প্রকাশ্যে আনছেন, এটা তাঁর রুচি। কিন্তু এটা সৌজন্যের মধ্যে পড়তে পারে না।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের বিবাদ এই মুহূর্তে চরমে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই টুইটারে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে ব্লক করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে সংসদে সতন্ত্র প্রস্তাবও এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে জনমতও গঠন করার চেষ্টা করছেন। তবে, এসবের মধ্যেও রাজ্য সরকারের বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছেন ধনকড়।