কলকাতা ব্যুরো: ইউরোপ থেকে শিক্ষা নিচ্ছে মহারাষ্ট্র। নতুন করে দ্বিতীয় দফায় করোনার ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় এখন থেকেই তৎপরতা শুরু করল মহারাষ্ট্র সরকার। আগামী জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মাসে ওই রাজ্যে দ্বিতীয় বার করোনা হানা দেবে বলে আশঙ্কা করে, এখন থেকেই সতর্কতার পথে হাঁটল শিবসেনা সরকার। রীতিমতো নোটিশ ইস্যু করে সরকারের তরফে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে সব স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলিকে। কোনমতেই যাতে এখন থেকে করোনা পরীক্ষায় ঢিলে না দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। শুক্রবার ২৪ ঘন্টায় ওই রাজ্যে ৪১৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।মহারাষ্ট্র দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় যখন চিন্তিত, তখন এ রাজ্য সহ অন্যান্য রাজ্যে অবশ্য তেমনভাবে আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে না। এরাজ্যে এখন ২৪ ঘন্টায় ঘরে চার হাজার জন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। তার মধ্যেই চালু করে দেওয়া হয়েছে লোকাল ট্রেন। মুম্বাইয়ে দেশ আনলক হওয়ার পরেই লোকাল ট্রেন চালু করা হলেও, তা হয়েছিল একেবারেই পরীক্ষামূলক ভাবে। ধাপে ধাপে বেঁধেছিলো ট্রেনের সংখ্যা। কিন্তু এ রাজ্যে সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। প্রথম দিন ৭৫ শতাংশের পর, তৃতীয় দিনেই প্রায় পূর্ণ মাত্রায় লোকাল ট্রেন চালু করতে রেল তৎপর হয়েছে, রাজ্য সরকারের অনুরোধে।যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, বেশি ট্রেন চালু হলে ভিড় কম হবে। কিন্তু বাস্তবে যেখানে রাজধানী কলকাতার প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত লোকজনের অধিকাংশেরই শহরে কর্মক্ষেত্রের পৌঁছানোর জন্য সবচেয়ে বড় পরিবহন লোকাল ট্রেন, সেখানে বেশি ট্রেন চালু হলেই ভীড় কমে যাবে, এই যুক্তি কতটা বাস্তবিক, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এমনকি শুক্রবার সকাল থেকে কলকাতা বা হাওড়া মুখী বিভিন্ন লোকাল ট্রেন দেখে মনে হয়নি, ট্রেন বাড়ার ফলে সোশ্যাল ডিসটেন্স মানা যাচ্ছে। বরং ট্রেন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকসংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।গত কয়েক মাস ধরে যারা কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে বেশি পয়সা খরচা করে বিকল্প পথের ব্যবস্থা করেছিলেন, স্বাভাবিকভাবেই ট্রেন চালু হয়ে যাওয়ায় তারাও এখন লোকাল ট্রেনে চড়ে বসেছেন।যদিও মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্তারা মনে করছেন, দিল্লিতে এখন করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। এর আগে জুন এবং সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ দিল্লিতে এসেছিল বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। একইভাবে কেরালাতে সেপ্টেম্বর মাসে নতুন করে করোনা হানা দিয়েছে। মহারাষ্ট্রে, দেশে করোনা হানার প্রথম থেকেই ব্যাপক আক্রমণ সা নিয়েছিল করোনা। প্রথমদিকে কিছুটা গা ছাড়া মনোভাবে মহারাষ্ট্রে ব্যাপক আকার নিয়েছিল। যদিও পরবর্তী ক্ষেত্রে অনেকটাই সতর্ক হয় সরকার। গণেশ চতুর্থী থেকে শুরু করে দশেরা- সব অনুষ্ঠানে মুম্বাই সোশ্যাল ডিসটেন্স মানার ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ নেয়। এবার দীপাবলিতে বাজি ফাটানোর ব্যাপারে যথেষ্ট কড়াকড়ি করেছে মহারাষ্ট্র সরকার।