কলকাতা ব্যুরো: আগামী রবিবার অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলবে লোকাল ট্রেন। প্রায় ৬ মাস পর রাজ্যের অনুরোধে বঙ্গে ট্রেন পরিবেষা শুরু করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার কোভিড নির্দেশিকা জারি করে এমনটাই ঘোষণা করা হল। জানানো হয়েছে, লোকাল ট্রেন চালু হচ্ছে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ৷ দ্বিতীয় লকডাউনের পর প্রায় ছ’মাস পরে আবার চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন । কিন্তু রাজ্যে করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে কিছু ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছে ছাড়।

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, আগামী রবিবার থেকে আবার স্বাভাবিক হতে চলেছে লোকাল ট্রেন। তবে আপাতত ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলবে ট্রেন। লোকাল ট্রেন চালাতে আমরা প্রস্তুত ছিলাম ৷ অপেক্ষা ছিল শুধু রাজ্য সরকারের সবুজ সংকেত মেলার। এবার তা পাওয়া গেল।

ভিড় নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনি বলেন যে, লোকাল ট্রেন আমাদের রাজ্যের লাইফলাইন। তাই ভিড় নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সহযোগিতার প্রয়োজন। লোকাল ট্রেনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের বিষয়টা একটা বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের কাছে। প্যানডেমিক এখনও শেষ হয়ে যায়নি। তাই আমার সাধারণ মানুষের কাছে একান্ত আবেদন যে, জরুরি কাজ ছাড়া যেন তাঁরা ট্রেনে সফর না করেন। তবে রেলের তরফ সবরকম চেষ্টা করা হবে যাতে নিখুঁত ও ত্রুটিহীনভাবে ট্রেন চালানো যায়। আরও বেশি সংখ্যক রেল পুলিশ মোতায়েন করা হবে। দেখা হবে যাতে সকলে মাস্ক পড়ে থাকেন৷ কোচের ভিতরেও নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

পাশাপাশি ১৬ নভেম্বর থেকে চালু হচ্ছে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশ লোকাল ট্রেনের ওপরেই নির্ভরশীল। তাই আবার রাজ্যে লোকাল ট্রেন চালু করার আবেদন আসে বিভিন্ন মহল থেকে। সেই আর্জিকেই মান্যতা দিয়েই স্কুল খোলার আগে চালু করে দেওয়া হচ্ছে লোকাল ট্রেন।

নবান্নের নির্দেশিকায় ঠিক কী বলা হয়েছে?

১৬ তারিখ থেকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খুলবে স্কুল।

৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলবে লোকাল ট্রেন।

জরুরি পরিষেবার নয় সম্পর্কিত নয় এই ধরনের সরকারি অফিসগুলি এবার থেকে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করতে পারবে এবং জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সরকারি দফতরগুলিতে ১০০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত থাকতে পারবেন।

এবার থেকে সিনেমা হল, থিয়েটাল, সদন, মঞ্চ, অডিটোরিয়াম, স্টেডিয়াম, শপিং মল, বাজার, রেস্তোরাঁ, স্পা এবং জিমগুলি ৭০ শতাংশ উপভোক্তা, দর্শক উপস্থিত থাকতে পারবেন। উল্লেখ্য,একদিন পর্যন্ত এই সংখ্যাটা ছিল ৫০ শতাংশ।

প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য যে কোচিং সেন্টারগুলি চালানো হয় সেগুলি ৭০ শতাংশ পড়ুয়া নিয়ে চালু করা যাবে।

রাত্রি ১১টা পর্যন্ত ৭০ শতাংশ গ্রাহক নিয়ে খোলা রাখা যাবে বার এবং রেস্তোরাঁগুলি।

বিয়ে, শ্যুটিং, টিভি অনুষ্ঠান, অডিয়ো রেকর্ডিংয়ের জন্য কোনও নির্দিষ্ট হল বা ভেন্যুতে ৭০ শতাংশ মানুষ উপস্থিত থাকতে পারবেন।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনে শ্যুটিং করার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

নবান্নের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টার মধ্যে অত্যাবশ্যক কোনও কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বার হওয়া চলবে না। তবে কালীপুজো এবং দীপাবলির জন্য ২ থেকে ৫ নভেম্বর এবং ছটপুজোর জন্য ১০ এবং ১১ নভেম্বর এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে। এছাড়া মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সহ অন্যান্য করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version