কলকাতা ব্যুরো: লখিমপুরে কৃষক মৃত্যুর মর্মান্তিক ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। এমনটাই দাবি বিশেষ তদন্তকারী দল তথা সিটের। মঙ্গলবার প্রকাশিত রিপোর্টে তদন্তকারী অফিসার একথা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখানোর সময় গত ৩ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি এলাকায় এসইউভি গাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল চার কৃষকের। মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশিস মিশ্র। সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার পর আশিসকে গ্রেপ্তার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

গত মাসেই ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রগুলির ফরেনসিক পরীক্ষা করে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল, তাতেও চাপে পড়েছিলেন অভিযুক্ত। স্পষ্ট বলা হয়েছে, ঘটনার দিন ওই লাইসেন্সড আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালিয়েছিল অভিযুক্তরা। যদিও কেউ গুলিবিদ্ধ হননি সেদিন।

কৃষকদের অভিযোগ ছিল, বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলেছে মন্ত্রী-পুত্র ও তাঁর সঙ্গীর আগ্নেয়াস্ত্র থেকে। মন্ত্রীপুত্রের রাইফেল ও অঙ্কিতের পিস্তল থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন দু’জনেই। শেষমেশ ফরেনসিক রিপোর্টে কৃষকদের সেই অভিযোগের সত্যতা মিলেছিল। আর এবার তদন্তকারী অফিসার বিদ্যারাম দিবাকরের রিপোর্টে দাবি করা হল, ওই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত।

গত ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের বিক্ষোভ চলাকালীন গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় চার কৃষকের। মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশ গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবাদীরা। চলে গণপিটুনিও। সেই হিংসাত্মক পরিস্থিতির মাঝে পড়ে প্রাণ হারান আরও ৪ জন।

প্রসঙ্গত, লখিমপুর কাণ্ডে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের তদন্তের শ্লথ গতি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য পুলিশের তরফে জমা দেওয়া পরপর দু’টি ‘স্টেটাস রিপোর্ট’‌ নিয়েও বিস্তর ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।

আর তিন মাসের মধ্যেই যোগীরাজ্যে নির্বাচন। তার আগে লখিমপুরের ঘটনায় চাপ বাড়িয়েছে বিরোধী শিবির। কংগ্রেস আগেই দাবি তুলেছে, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে সিটের এহেন দাবি, বিরোধীদের হাতেই নতুন অস্ত্র তুলে দেবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version