কলকাতা ব্যুরো: ফের বড়সড় ধাক্কা সেবক-রংপো রেল প্রকল্পে। আবারও ওই প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়লেন শ্রমিকরা। মৃত্যু হয়েছে এক শ্রমিকের। পুলিশ ও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শ্রমিকের নাম মহম্মদ সাকিম, বয়স ৪৮ বছর। তিনি উত্তর দিনাজপুরের পোখারিয়ার বাসিন্দা। এই নিয়ে ওই প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হলো ১০।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাত আড়াইটে নাগাদ রম্ভি থানার অন্তর্গত লোহাপুলের কাছে চার নম্বর টানেলে কাজ করার সময় ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে। এদিন রাতে টানেলে পাঁচ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। মূলত তাঁরা টানেলের ভিতর মাটির ধস ভেঙে পড়া আটকানো জন্য বড় বড় স্টিলের প্লেট লাগানোর কাজ করছিলেন। আচমকা সেই সময় একপাশে মাটি ধসে পড়ে। যার ফলে ভারসাম্য হারান শ্রমিকরা। এতে স্টিলের প্লেটগুলি মহম্মদ সাকিমের উপর পড়ে যায়। তাঁর মাথা, চোখ, পিঠ ও পেট গুরুতর জখম হয়। তখনই তাঁকে বাকি শ্রমিকরা উদ্ধার করে স্থানীয় রম্ভি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু নিয়ে যাওয়ার সময় পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর কালিম্পং জেলার পুলিশ মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ পরে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কালিম্পং জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
সেবক- রংপো রেল প্রকল্পের আধিকারিক মহিন্দর সিং বলেন, রাতে কাজ করার সময় আচমকা স্টিলের প্লেটের উপর মাটির ধস পড়ে যায়। যার ফলে ওই প্লেট শ্রমিকের উপর পড়ে যায়। জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আইনত মৃতের পরিবারকে সবরকম সহযোগিতা করা হবে।
একইভাবে গত ডিসেম্বরে মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল দুই শ্রমিকের। এর আগে ১৮ জুন টানেল নির্মাণের সময় নরেশ সোরেন ও সালখু মুর্মু নামে দুই শ্রমিকের ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল। ওই প্রকল্পের অধীনেই কালিম্পং জেলার কালিখোলায় সেবক-রংপোর সেতু নির্মাণের সময় মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয় আরও দুই শ্রমিকের। ঘটনায় মৃত্যু হয় সন্তোষ রায় (২৫) এবং কারু ওঁরাও (২৫) নামে দুই শ্রমিকের। দু’জনেই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ছিলেন। এদিনের ঘটনার পর ফের একবার বড়সড় প্রশ্নের মুখে রেল কর্তৃপক্ষ। উঠছে গাফিলতির অভিযোগও।
প্রসঙ্গত, সেবক থেকে রংপো রেলপথ নির্মাণে উদ্যোগ নেয় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। ২০২০ সালে ওই রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ওই রেলপথ নির্মাণের ৭০ শতাংশে ১৪টি টানেল-সহ দশটির বেশি সেতু রয়েছে। মোট ৪৪ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ৪১ কিলোমিটার পশ্চিমবঙ্গ ও সাড়ে তিন কিলোমিটার সিকিমের অধীনে রয়েছে।