এক নজরে

রাতের কলকাতায় বিপদ

By admin

September 06, 2020

কলকাতা ব্যুরো : রাতের কলকাতা আবার বিপদজ্জনক হয়ে উঠলো। এক তরুণীকে শ্লীলতাহানি থেকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতরভাবে আহত হলেন উদ্ধারকারী মহিলা নিজেই। শনিবার রাতে এমনই ঘটনা ঘটে গেলো ইস্টার্ন বাইপাসের রাস্তায়।

ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে। মায়ের জন্মদিন পালন করে স্বামী ও মেয়ের সঙ্গে গাড়ি করে বাড়ি ফিরছিলেন নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়। ফেরার পথে দেখেন তাদের পিছনের গাড়ি থেকে এক তরুণীর চিৎকার আসছে বাঁচাও বাঁচাও করে। রাত তখন প্রায় বারোটা। নীলাঞ্জনা তার স্বামীকে বলেন গাড়িটি আটকাতে। তার কথা মতো স্বামী দীপ চট্টোপাধ্যায় পিছনের গাড়িটি আটকান। নীলাঞ্জনা তার গাড়ি থেকে নেমে পিছনের গাড়ির দিকে এগিয়ে যান। নীলাঞ্জনাকে আসতে দেখে পিছনের গাড়ির চালক তার পাশে বসে থাকা মেয়েটিকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দেন। ওই তরুণীর জমা কাপড় ছেঁড়া ছিল, মুখে চোখে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানা যায়।

ইতিমধ্যে নীলাঞ্জনা আসছেন দেখে গাড়ির ড্রাইভার ব্যাক গিয়ারে প্রচন্ড বেগে গাড়িটি নিয়ে যান। গাড়ি নীলাঞ্জনার পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায় প্রবল গতিতে। নীলাঞ্জনা সেখানেই লুটিয়ে পড়েন। তার স্বামী জানান, আর একটু হলেই নীলাঞ্জনার মাথার ওপর দিয়ে হয়তো চাকা চলে যেতে পারতো। তার স্বামী প্রথমে নিলাঞ্জনাকে এক বেসরকারি হাসপাতালে ফোন করেন। এরপর ১০০ ডায়াল করে পুলিশের সাহায্য চান। সঙ্গে সঙ্গে কসবা ট্রাফিকের এক সার্জেন্ট ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তারই উদ্যোগে অ্যাম্বুলেন্স এনে নীলাঞ্জনাকে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আক্রান্ত তরুণীর কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে এই তরুণী অমিতাভ বোস নামে এক ব্যাক্তির সঙ্গে পরিচিত হন কয়েকদিন আগে। সেদিন তিনি ওই ব্যাক্তির সঙ্গে ডেটিং এ বেরিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ব্যাক্তি তাকে গাড়িতে শ্লীলতাহানি করেন এবং অভব্য আচরণ করেন। অভিসিক্তার কাছে সেই তরুণী তাকে নামিয়ে দিতে বললেও তাকে অমিতাভ বোস সেখানে নামান নি। সেই সময় তরুণী চিৎকার করে সাহায্য চান।

এদিকে হাসপাতাল সূত্রে খবর নীলাঞ্জনার মাথায় আঘাত লেগেছে, ছয়টি সেলাইও পড়েছে। পা হাটুর তলা থেকে ভেঙ্গে গেছে। সিনবোন টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। অবস্থা গুরুতর।

তার স্বামী দীপবাবু জানান যে তিনি আনন্দপুর থানাকে নীলাঞ্জনার ব্যাপারে আলাদা মামলা করতে বলেছেন। পুলিশ সূত্রের খবর উদ্ধার হওয়া তরুণীর বয়ানের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। তরুণীকে মহিলা কনস্টেবল দিয়ে তার বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।