কলকাতা ব্যুরো: আফগানিস্তানে তালিবানি শাসনের পুনরুত্থানে গোটা বিশ্বের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়৷ দেশের অন্যান্য শহর ও মহানগরের মতোই কলকাতাতেও ভিনদেশিদের নিয়মিত আনাগোনা রয়েছে ৷ তাঁদের মধ্যে বহু আরব, ইরাক, ইরান, আফগানের বাসিন্দা রয়েছেন ৷ এবার শহর ও শহরবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে এদের সকলের উপর বাড়তি নজরদারির বাড়াচ্ছে পুলিশ। একইসঙ্গে এদের নিরাপত্তা নিয়ে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, তাও দেখতে বলা হচ্ছে পুলিশকে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, এমন বহু বিদেশিই আছেন যাঁরা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও শহরে থেকে যান ৷ কলকাতা ফুটবলের শহর ৷ একাধিক নামী ক্লাব রয়েছে এখানে৷ সেইসব ক্লাবে বহু বিদেশি খেলোয়াড় খেলতেও আসেন ৷ অনেকে আসেন চিকিৎসা করাতে কিংবা উচ্চশিক্ষার জন্য ৷ এইসব তালিকাতেও ভিন দেশীয় সংখ্যা নেহাতই কম নয় ৷ কলকাতার পার্ক সার্কাস, তপসিয়ার মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলি ছাড়াও শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট বা বাড়ি ভাড়া করে থাকেন এই এরা।আবার অনেকে এখানে বছরের পর বছর থেকে যান শুধুমাত্র ব্যবসার কাজে ৷ এঁদের সকলের কাছে ভারতে থাকার বৈধ নথি রয়েছে কিনা, এবার সেইসবই যাচাই করবে কলকাতা পুলিশ ৷
পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, প্রশাসনের আশঙ্কার কথা। আসলে আফগানিস্তানে পুনরুত্থানের পর তালিবানরা অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতা স্থাপনের চেষ্টা করছে ৷ তাদের মধ্যে অন্যতম আনসার-উল-বাংলা টিম বা এবিটি ৷ কিছুদিন আগে এই সংগঠন তাদের নাম পাল্টে আনসার-উল-ইসলাম করে দিয়েছে ৷ সংগঠনের সদস্যদের দাবি, তারা নাকি আল-কায়দার বাংলাদেশ শাখা ৷
সাধারণত, এই ধরনের সংগঠনের সদস্যরা নানারকম পরিচয় ভাঁড়িয়ে অন্যান্য দেশে গিয়ে ঘাঁটি গাড়ে৷ কলকাতাতেও পরিচয় ভাঁড়িয়ে এমন কেউ গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে কিনা, তা জানতে চাইছে কলকাতা পুলিশ ৷ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তৎপরতা ৷ লালবাজারে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের এই বিষয়ে কাজে লাগানো হয়েছে ৷ কারও আচরণে সন্দেহ হলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে ৷ আবার আফগানিস্থানে তালিবানদের নতুন করে শক্তি বৃদ্ধিতে এ শহরে তাদের হয় গলা ফাটানোর প্রবণতা নজর এরাচ্ছে না পুলিশের। তাই সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গেই অন্যান্য ক্ষেত্রে বাড়তি নজর দিচ্ছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই তালিবানদের হয়ে অসমে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢাক পেটানো ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবার আফগানিস্থানে ঘটনার জেরে এখানে থাকা নাগরিকরা যাতে নিরাপত্তার সমস্যায় না পড়েন সেদিকেও নজর রাখছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি।