এক নজরে

১৭ দিনে পড়ল জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন

By admin

October 21, 2024

বৈঠকে আহ্বান জানিয়ে কিংবা সেই বৈঠক শুরুর আগেই কী কোনো শর্ত চাপিয়ে দেওয়া যায়? তাই কোনো পূর্ব শর্ত নয়, অনশন জারি রেখেই সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বৈঠকে যথাসময়ে পৌঁছে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।শনিবার দুপুরে আচমকা রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে মুখ্যসচিব, রাষ্ট্রসচিব, কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক), ডিসি (সেন্ট্রাল)এসে হাজির হন ধর্মতালয় জুনিয়ার ডাক্তারদের ধর্নামঞ্চে। মঞ্চে অনশনরত ডাক্তারদের চৌকিতে বসেই মুখ্যসচিব কথা বলেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। তিনি তাঁদের দাবিদাওয়াগুলি শুনে তা নিয়ে রাজ্য সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, সেগুলি জানান। কিছুক্ষণ কথাবার্তা চলার পরে মুখ্যসচিবের মোবাইলে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরে মাইকের সামনে সেই মোবাইল ধরে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবি নিয়ে সম্ভব হলে এ দিনই বৈঠকে বসার প্রস্তাব দেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি তাঁদের জানান, তাঁর ব্যস্ত শিডিউলের মধ্যেও জুনিয়ার ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন সোমবার বিকেল ৫টায় নবান্নে।

শনিবার জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবি মুখ্যমন্ত্রী ফোনে প্রথমবার শোনেন। যারা দু’মাসের বেশি সময় ধরে সুবিচারের লক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, যাদের আন্দোলনের পাশে কেবলমাত্র সিনিয়ার ডাক্তারেরা নন সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন তাঁরা কী কী দাবি করছেন সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ধারণা নেই, এর থেকে আশ্চর্যের আর কি হতে পারে। তবু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সামনাসামনি বৈঠক করতে চেয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। সোমবার বিকেল ৫টায় নবান্নে তাঁদের সময় দেন তিনি। পরে মুখ্যসচিব তাঁদের ইমেলে জানিয়ে দেন, সোমবার বিকেল ৪৫ মিনিট সময় ডাক্তারদের জন্য দিতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী। সাড়ে ৪টের মধ্যেই জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ জন প্রতিনিধিকে নবান্নে পৌঁছে যেতে বলেন তিনি। কারা যাবেন, সেই ১০ প্রতিনিধির নাম ইমেল করে জানাতে বলা হয় ডাক্তারদের। মুখ্যসচিবের ইমেলে এই শর্তও দেওয়া হয়। বলা হয়, অনশন তুলে নিলে তবেই সোমবার মমতা ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ইমেলের জবাব দেওয়ার আগে দীর্ঘ বৈঠক করেন ডাক্তারেরা। তার পর ইমেলে জুনিয়ার ডাক্তারেরা জানান, তাঁরা নবান্নের বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন, তবে ‘শর্ত’ অনুযায়ী অনশন তুলে নয়। অনশন চলবে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।

১০ দফা দাবি না মিটলে কোনওভাবেই যে অনশন থেকে জুনিয়ার ডাক্তাররা সরবেন না, সেকথা যেমন স্পষ্ট তেমনি বৈঠকে সমস্যার সমাধান না হলে মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্য ধর্মঘটের কথাও তাঁরা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। রবিবার জুনিয়র ডাক্তারেরা আরও জানিয়েছেন, ‘মুখ্যসচিব বলছেন আমাদের দাবি বেশিরভাগ মেনে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোথায় কোথায় গলদ রয়েছে তা জানিয়েই রবিবার পাল্টা ইমেল পাঠানো হয়েছে। শুধু মৌখিক আশ্বাসে অনশন থামবে না। লিখিত আশ্বাস দিতে হবে।’তবে ১০ দফা দাবি না মানা হলে মঙ্গলবার থেকে সর্বস্তরে ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সিনিয়র ডাক্তাররাও তাঁদের সঙ্গ দেবেন বলে দাবি করা হয়েছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে সোমবারের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদৌ এই বৈঠক থেকে কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসে কিনা বা ডাক্তাররা অনশন প্রত্যাহার করেন কিনা, সেটা দেখার।

കൊൽക്കത്തയിൽ സമരം തുടരുന്ന ജൂനിയർ ഡോക്ടർമാർ നടത്തിയ വാർത്താസമ്മേളനത്തിൽ നിന്ന്.

এদিকে সোমবার ১৭ দিনে পড়ল জুনিয়র ডাক্তারদের ‘আমরণ অনশন’। আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে গত ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় অনশনে বসেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে একাধিকজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁরা ছাড়া পেয়েছেন। কিন্তু অনশন মঞ্চে থাকা আরও অনেকেও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের শারীরিক অবস্থা মোটেও ভাল নয়। যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তাঁরা ছাড়া পেলেও এখন আর নতুন করে অনশন শুরু করতে পারবেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়েছে, তাঁদের শরীর এখনও মারাত্মক দুর্বল। টানা বিশ্রামের দরকার। কিন্তু বাকিদের শরীর কেমন আছে? ধর্মতলার অনশন মঞ্চে এখনও এমন ডাক্তার রয়েছেন যারা শুরুর দিন থেকেই অনশনে। সিনিয়র চিকিৎসকরা সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, কারও অবস্থাই ভাল বলা যায় না। তবে স্থিতিশীল। শরীরের ওপর বিরাট চাপ পড়ছে ঠিকই, কিন্তু অল্প বয়স বলে তাঁরা সহ্য করে নিচ্ছেন।  অনশনের ফলে লিভার, কিডনি তো বটেই, হার্ট এবং ব্রেনেও চাপ পড়ে। তাই জুনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। তবে অনশন মঞ্চ থেকে তাঁদের স্বাস্থ্য নিয়ে যে রিপোর্ট সিনিয়ার ডাক্তাররা হাতে পেয়েছেন তাতে আপাতত তাঁরা সন্তুষ্ট। কারণ সেইভাবে জটিল রোগ কারও হয়নি বা নতুন করে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েননি। তবে এই ভাবে আর কতদিন জুনিয়ররা অনশন চালিয়ে যেতে পারবেন, তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সিনিয়র ডাক্তাররা।